ফিলিপাইন থেকে অর্থ ছাড়ে বিলম্ব হতে পারে
কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে চুরির আট কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার বা অন্তত উদ্ধার করা অর্থ বিলম্ব হতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ।
সম্প্রতি ফিলিপাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জন গোমেস দেশটির দৈনিক পত্রিকা ইনকোয়ারারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আজ শুক্রবার পত্রিকাটির সংবাদে বলা হয়েছে, জন গোমেস চলতি এপ্রিল মাসের মধ্যেই এ অর্থ ফেরত দিতে ফিলিপাইনকে তাগাদা দিয়েছেন।
ফিলিপাইনের অর্থ পাচারবিরোধী কাউন্সিলের (এএমএলসি) উদ্ধার করা অর্থ হস্তান্তর প্রক্রিয়া নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন গোমেস। বাজেয়াপ্ত মামলায় দেশটির আদালতের মাধ্যমে প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে।
আগামী ৩০ জুন ফিলিপাইনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট অ্যাকুইনোর মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর আগে অর্থ ফেরত দেওয়ার আশা প্রকাশ করেছে দেশটির সিনেট।
গোমেস বলেন, ‘বাজেয়াপ্ত মামলার আইনি প্রক্রিয়া বিবেচনায় রেখেই বলছি, যে ক্ষেত্রে এড়ানো যায়, সে ক্ষেত্রে আমরা বিলম্ব চাই না। আমরা বিচার মন্ত্রণালয়ের (ফিলিপাইন) সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি এবং বিচারমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞ যে তিনি আমাদের আইনি পরামর্শ দিয়েছেন এবং এ ব্যাপারে বিচার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছি।’
রাষ্ট্রদূত বলেন, জমা দেওয়া ও জব্দ করা অর্থ নিতে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাগজপত্র জমা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, ‘বাজেয়াপ্ত মামলার ব্যাপারে আমাকে বলা হয়েছে, অন্য কোনো দাবিদার না থাকলে সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে অর্থ ছাড় করা হবে। স্বাভাবিকভাবেই অন্য কোনো দাবিদার এ ক্ষেত্রে নেই। কারণ একটা বিষয় প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে হ্যাকাররা অর্থ চুরি করেছেন।’
বিভিন্ন ক্যাসিনো ও রেমিট্যান্সবিষয়ক প্রতিষ্ঠান ফিলরেম সার্ভিসের কাছে যে পরিমাণ অর্থই থাকুক না কেন, তা ফেরত দিতে আহ্বান জানিয়েছেন গোমেস। ক্যাসিনোর ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘খেলার টেবিল থেকে এরই মধ্যে দুর্বৃত্তরা মুনাফা অর্জন করেছে।’ তিনি বলেন, ‘যেহেতু তারা এই অর্থ থেকে মুনাফা করেছে, সেটা তাদের না, পুরো অঙ্কই তাদের ফেরত দিতে হবে।’
উদাহরণস্বরূপ রাষ্ট্রদূত বলেন, সোলার ক্যাসিনো থেকে ১০৭ মিলিয়ন পেসো (প্রায় ২৩ লাখ মার্কিন ডলার) ও ম্যাকাউভিত্তিক ক্যাসিনো অপারেটর সান সিটি থেকে ৯০৩ মিলিয়ন পেসো (প্রায় এক কোটি ৯৫ লাখ মার্কিন ডলার) জব্দ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে ফিলিপাইনে ঢোকা ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে ১৭ মিলিয়ন ডলারের এখনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে সঞ্চিত বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার (প্রায় ৮০৮ কোটি টাকা) চুরি হয়। এর মধ্যে আট কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের ব্যাংকিং ব্যবস্থায় প্রবেশ করে। বাকি অর্থ যায় শ্রীলঙ্কায়। এর মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে অর্থ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ।