জাবিতে সশরীরে ক্লাস শুরু, মুখর ক্যাম্পাস
করোনাকালীন স্থবিরতা ভেঙে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে। ক্লাসরুমে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা, ক্যাফেটেরিয়া ও টিএসসিতে শিক্ষার্থীদের গল্প-আড্ডা, বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরিতে মুখর ছিল জাবি ক্যাম্পাস।
বৃহস্পতিবার দীর্ঘ দেড় বছর পর সশরীরে ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হলো। সরেজমিনে দেখা যায়, অধিকাংশ বিভাগেই উল্লেখযোগ্য শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে সশরীরে শিক্ষকেরা ক্লাস নিয়েছেন। বিভাগগুলো তাদের শিক্ষার্থীদের বরণে সেজেছে নতুন করে। ক্লাস শুরুর আগে বিভাগের প্রবেশদ্বারে ছাত্র-ছাত্রীদের গোলাপ ফুল দিয়ে অভ্যর্থনা জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক কলা ও মানবিকী অনুষদভুক্ত দর্শন ও ইংরেজি বিভাগ, সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, পরিসংখ্যান এবং আইআাইটিতে ক্লাস পরিদর্শন করেন। সেখানে শিক্ষার্থীরা মুখে মাস্ক পরিধান এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে ক্লাস করতে দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ সময় উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ড. মো. নূরুল আলম বলেন, ভালো থাকার জন্য স্বাস্থ্য সচেতন থাকতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন বিভাগের অধ্যাপক ড. শাহেদুর রশিদ। ক্লাসে ৪১ জন শিক্ষার্থী সশরীরে এবং ১০ জন অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ক্লাস নিয়ে খুবই ভালো লাগছে। ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কে ক্লাসই প্রধান ভূমিকা রাখে। আবার একসঙ্গে সবাইকে দেখে প্রাণচঞ্চলতা ফিরে এসেছে। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে আমরা সশরীরে শ্রেণি কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারব।’
শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাতে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ সাজে বেশ জাঁকজমকভাবে। অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. নীলাঞ্জন কুমার সাহা বলেন, ‘দীর্ঘ দেড় বছর আমরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে পাইনি। তবে অনলাইনে আমাদের শ্রেণি কার্যক্রম চালু ছিল। শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরেছে। ক্লাসের যে আনন্দ উল্লাস আমরা এতদিন মিস করছিলাম তা আবারও আমরা ফিরে পেলাম। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য রক্ষায় আমরা যথেষ্ট প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও হাত ধোয়ার বেসিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন থেকে নিয়মিতভাবে চলবে শ্রেণি কার্যক্রম।’
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী এনামুল হক বলেন, ‘দীর্ঘ বন্ধের পর বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। এটা খুবই আনন্দের। শিক্ষকরা সশরীরে ক্লাস নিয়েছেন। অনলাইনে ক্লাস হওয়ার কারণে যেসব ঘাটতি হয়েছে আশা করি এখন তা পূরণ হবে। সশরীরে ক্লাসের কোনো বিকল্প নেই।’