জাবিতে হল মসজিদে ফাটল, ভেঙে পড়ছে আস্তরণ
দীর্ঘ ১৮ মাস পর আগামী ১১ অক্টোবর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) আবাসিক হল খুলে দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রস্তুত হলগুলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সালাম বরকত ও কামালউদ্দিন হলের মসজিদটি পড়ে রয়েছে অনাদর আর অবহেলায়। দেয়ালগুলোতে দেখা দিয়েছে বিশাল ফাটল। খসে পড়ছে দেয়াল ও ছাদের আস্তরণ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৯০ সালে নির্মাণ হওয়ার পর এ পর্যন্ত পাঁচ বার সংস্কার করা হয় মসজিদটি। কিন্তু গত পাঁচ বছর ধরে মসজিদটি একবারও সংস্কার করেনি প্রশাসন। শিক্ষার্থীরা মসজিদ সংস্কারের জন্য দাবি তুললে নেওয়া হয়েছিল প্রাথমিক উদ্যোগ। কিন্তু সেই উদ্যোগ এখনো বাস্তবে রূপ পায়নি। দুটি হলের প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থীসহ চারটি হলের আবাসিক শিক্ষকরা এখানে নামাজ পড়েন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদের প্রায় সব দেয়ালে ফাটল দেখা গিয়েছে। প্রতিনিয়ত ছাদের ও দেয়ালের আস্তরণ খসে খসে পড়ছে। করোনা মহামারিসহ মসজিদটি সংস্কার না করায় এখন তেমন কেউ নামাজ পড়তে আসে না। শুধু জুমার দিন শিক্ষকসহ কয়েকজন নামাজ পড়তে আসেন। কিন্তু নামাজ পড়তে এসে সবাই থাকেন আতঙ্কে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে মসজিদের ভবন।
মসজিদের মুয়াজ্জিন ইসমাঈল হোসেন জানান, এখন তো শিক্ষার্থীরা নেই। করোনার কারণে শিক্ষকরাও আসেন না। গত শুক্রবারে কয়েকজন শিক্ষক আসেন। বন্ধের মধ্যে ছাদ থেকে আস্তরণ ভেঙে এক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। অনেকবার এই বিষয়গুলো জানানো হয়েছে। সবাই মসজিদের ভঙ্গুর দশা সম্পর্কে জানেন। প্রশাসন দ্রুত সংস্কারে উদ্যোগ না নিলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বর্তমানে মসজিদের দায়িত্বে থাকা শহীদ সালাম বরকত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার বলেন, ‘মসজিদটি নতুন করে নির্মাণ করা হবে। হল থেকে অফিসিয়াল যেসব কাজ করতে হয় তা আমরা শেষ করে পাঠিয়েছি। এখন প্রকল্প অফিস দরপত্র আহ্বান করার মাধ্যমে কাজ শুরু করবে।’
হল খোলার পর শিক্ষার্থীরা কোথায় নামাজ পড়বে? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রভোস্ট বলেন, ‘বিকল্প জায়গার ব্যাপারে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। খুব শিগগিরই বিকল্প নামাজের ব্যবস্থা করা হবে।’
মসজিদের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) নাছির উদ্দিন বলেন, ‘মসজিদের নকশাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু হল সংস্কারের জন্য এই পর্যন্ত মাত্র পাঁচ লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আগামী জুনে বাকি টাকা বরাদ্দ পাব। তবে আমরা আগামী ডিসেম্বরে মসজিদ ভবনের দরপত্র আহ্বান করব। আশা করছি আগামী বছরের জুন-জুলাইয়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।’