জাবির নতুন ছয়টি আবাসিক হলে যেসব সুবিধা থাকছে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় হলেও বর্তমানে রয়েছে তীব্র আসন সংকট। সমস্যা নিরসনে তৈরি হচ্ছে ১০ তলাবিশিষ্ট অত্যাধুনিক ছয়টি হল। নতুন হলগুলোতে থাকছে আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা। প্রতিটি হলে এক হাজার শিক্ষার্থীর আসন ব্যবস্থা রয়েছে। এতে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক রূপে ফিরবে জাবি।
নতুন প্রতিটি হলে রাখা হয়েছে ছয়টি লিফট। প্রতিবারে প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী লিফটে চলাচল করতে পারবে। প্রতিটি রুমের সঙ্গে থাকবে বারান্দা ও করিডোর। হলের মধ্যে বিনোদনের জন্য থাকবে তিনটি কমন রুম, পড়াশুনার জন্য উন্নত লাইব্রেরি, হল ছাত্র সংসদ ও একটি ক্যান্টিন। ডাইনিংয়ে প্রায় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী একত্রে খাবার খেতে পারবে। শিক্ষার্থীরা চাইলে নিজেরা রান্নাও করতে পারবে। সেজন্য প্রতি তলায় রাখা হয়েছে গ্যাসের চুলা। শিক্ষার্থীদের ব্যায়ামের জন্য হলের মধ্যেই জিমনেশিয়ামের ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া হল থেকেই ইন্টারনেটের ব্রডলাইন সংযোগের সুবিধা থাকবে- এমনটাই জানিয়েছেন প্রকল্পের প্রকৌশলীরা।
নতুন হলগুলো নির্মিত হলে ক্যাম্পাসে হলের সংখ্যা দাঁড়াবে ২২টি। এর মধ্যে ১১টি ছেলেদের এবং ১১টি মেয়েদের।
প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, করোনা মহামারিতেও থেমে নেই নির্মাণকাজ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিমপ্রান্তে ছাত্রদের জন্য ২০, ২১, ২২ নম্বর ভবন এবং পূর্বপ্রান্তে ছাত্রীদের জন্য ১৭, ১৮ ও ১৯ নম্বর ভবনের নির্মাণকাজ দিন-রাত চলছে। সব মিলিয়ে প্রকল্পগুলোতে কাজ করছে প্রায় এক হাজার শ্রমিক।
কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলো। ছাত্রদের হলের কাজ শতকার প্রায় ৩০ ভাগ এবং ছাত্রীদের হলের ৫০ ভাগ শেষ হয়েছে।’
কবে শেষ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘সব ঠিক থাকলে এ বছরের ১৬ ডিসেম্বরের আগেই হলের কাজ সম্পন্ন হবে।’
উল্লেখ্য, একটি মডেল বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ২৩ অক্টোবর একনেকে এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। এ অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩টি স্থাপনা তৈরি হবে। ছয়টি আবাসিক হল ছাড়াও রয়েছে ১০ তলাবিশিষ্ট প্রশাসনিক ভবন, হাউস টিউটরদের বাসভবন, প্রভোস্টদের আবাসিক কমপ্লেক্স, শিক্ষক, কর্মকর্তা, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী, পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের জন্য আবাসিক টাওয়ার, গেস্ট হাউস-কাম গ্র্যাজুয়েট রিসার্চার হাউস, জীববিজ্ঞান, সামাজবিজ্ঞান, কলা ও মানবিকী অনুষদ, গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের আনুভূমিক সম্প্রসারণ, লেকচার থিয়েটার এবং পরীক্ষার হল নির্মাণ, নতুন লাইব্রেরি ভবন, স্পোর্টস কমপ্লেক্স, সেলিম আল দীন মুক্তমঞ্চের উন্নয়ন, ছাত্রীদের জন্য খেলার মাঠ।