জাবি খোলার দাবিতে প্রতীকী উন্মুক্ত ক্লাস
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) খোলার দাবিতে ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে প্রতিবাদী প্রতীকী উন্মুক্ত ক্লাস হয়েছে। ক্লাস নিয়েছেন দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় এই প্রতিবাদ ক্লাস শুরু হয়। তারপর বৃষ্টি শুরু হওয়ায় ক্লাসের বাকি অংশ নতুন কলা অনুষদের বারান্দায় অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাসে বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
অধ্যাপক রায়হান রাইন ‘উত্তর আধুনিকতা ও ফ্যাসিবাদ’ বিষয়ে ক্লাস নেন। ক্লাসের আলোচনায় তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিজমের একটি উপায় হলো সত্যকে আড়াল করা। ক্ষমতাই হলো সেখানে প্রধান বিবেচ্য বিষয়। সেখানে যৌক্তিকতার কোনো স্থান থাকে না।’
ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শাকিল ইসলাম বলেন, অনেকদিন পর ক্লাসের পরিবেশ পেয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই ক্লাস করেছে। আমাদের মধ্যে কোনো ভয়ভীতি কাজ করছে না। ক্লাসরুমে ক্লাস করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। দ্রুতই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম। গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক থেকে কর্মসূচি হিসেবে বলা হয়, এই উন্মুক্ত ক্লাস বিশ্ববিদ্যালয় খুলে না দেওয়া পর্যন্ত চলবে।
আগামী ২৯ আগস্ট অধ্যাপক আনু মুহাম্মদের ক্লাস নেওয়ার কথা রয়েছে।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, করোনাভাইরাসের কারণে দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ছিল। এর মধ্যে আজ সেই ছুটি বাড়িয়ে ১১ সেপ্টেম্বর করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়েছে।
যদিও এর মধ্যে গত মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছিলেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে, করোনার সংক্রমণ কমলে খুব শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে।
সেদিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আওয়ামী লীগের সংস্কৃতিবিষয়ক উপকমিটির আয়োজনে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বৈশ্বিক সংকটের শুরু থেকে আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, আমাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ব্যাহত না করে, স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি অগ্রাধিকার দিয়ে যেনো কাজ করি। আমরা এখন পর্যন্ত সেটাই করছি। তারা যেনো পড়াশোনায় পিছিয়ে না পড়ে, এজন্য নানা পদ্ধতি অবলম্বন করেছি।’
‘আশা করি, যেভাবে সংক্রমণের হার ক্রমেই নিচে নেমে আসছে, এটা আমাদের জন্য সুখবর। এই নিম্নগতি থাকলে খুব শিগগিরই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব।’
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কৌশল সম্পর্কে জানিয়ে ডা. দীপু মনি সেদিন বলেছিলেন, ‘তবে ধাপে ধাপে খুলব। কারণ আমাদের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পৃথিবীর যেকোনো দেশের তুলনায় বেশি। কারণ এ অসুখে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সবাই শুরু থেকেই সপ্তাহে ছয়দিন হয়ত ক্লাস করার সুযোগ পাবে না। একটু সময় নিয়ে হবে সেটা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য আমাদের সার্বিক প্রস্তুতি আছে। শুধু অপেক্ষা সংক্রমণের হার আরেকটু নিচে নামার।’