দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে ভারত ও পাকিস্তানে
ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসনামলে বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ভারতে ও পাকিস্তানে চলে যায় বলে দাবি করেছেন বিশিষ্ট প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান।
আন্তর্জাতিক জাদুঘর দিবস ২০২২ উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদ (আইকম) বাংলাদেশ, জাবির প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও ইতিহাস বিভাগের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত জাদুঘর বিষয়ক বিশেষ সেমিনারে তিনি এ দাবি করেন।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে আন্তর্জাতিক জাদুঘর পরিষদ (আইকম) বাংলাদেশের সভাপতি ও জাবি প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “প্রাচীন পুণ্ড্রনগরে (মহাস্থানগড়ে) ১৯৩০ সালে আবিষ্কৃত হয় বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি শিলালিপি। ব্রাহ্মী হরফে লেখা প্রাকৃত ভাষার শিলালিপিটি বাংলাদেশের প্রাচীনতম লেখনির সাক্ষ্য বহন করে। তৎকালীন সময়ে অমূল্য প্রত্নবস্তুটি ভারতীয় সংগ্রহশালা কলকাতায় নেওয়া হয়।”
তিনি আরও জানান, কুমিল্লার ময়নামতির শালবন বিহার ও অন্যান্য প্রত্নস্থানে ১৯৫০ এবং ৬০ এর দশকে বড় আকারের প্রত্নতাত্ত্বিক খনন পরিচালিত হয়েছিল। উৎখননে আবিষ্কৃত অসংখ্য প্রত্নবস্তু তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসের অমূল্য প্রত্নবস্তুগুলো স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আর ফেরত আসেনি। বর্তমানে সেগুলো পাকিস্তানের গুদামে অবহেলায়-অযত্নে পড়ে আছে।
এসময় অধ্যাপক ড. সুফি মোস্তাফিজুর রহমান ভারত ও পাকিস্তান থেকে প্রত্নবস্তুগুলো ফেরত আনার দাবি জানিয়ে বলেন, “সমগ্র বিশ্বে উপনিবেশ শাসনকালে সংগৃহীত বহুপ্রত্নবস্তু স্বাধীন দেশে ফেরত দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি জার্মানি নামিবিয়ার অনেক প্রত্নবস্তু ফেরত দিয়েছে। ব্রিটিশ জাদুঘর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্মিথসোনিয়ান জাদুঘরে সংরক্ষিত প্রত্নবস্তু ফিরিয়ে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে কেনিয়া।”
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সংসদ সদস্য সিমিন হোসেন রিমি মুঠোফোনে যুক্ত হয়ে বলেন, “যেকোন জাতির ইতিহাসে জাদুঘর একটি বড় ভূমিকা পালন করে। জাদুঘরের সাথে মানুষের সংযোগ রাখা জরুরি। তরুণ সমাজ, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জাদুঘরের বিষয়ে শিক্ষা ও সচেতনতা বৃদ্ধিও প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, ট্রেজারার অধ্যাপক রাশেদা আখতার, কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. মোজাম্মেল হক প্রমুখ।