স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে ৪০ জাবি শিক্ষার্থী আহত, হল খোলার দাবি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন গেরুয়া এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের দফায় দফায় হামলায় অন্তত ৪০ জাবি শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। মসজিদে মাইকিং করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু করে দিনগত রাত ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় হামলা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় নয়বার গুলির শব্দ শোনা গেছে। দুপক্ষ থেকে ইট পাটকেল ছোড়া হয়। শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরের অংশে এবং গ্রামবাসী বাইরে মুখোমুখি অবস্থান নেয়।
এ ঘটনায় অন্তত ৪০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন জাবি চিকিৎসাকেন্দ্রের কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজ। আহতদের বেশির ভাগের ইটের আঘাতে মাথা, মুখ, শরীরের বিভিন্ন স্থান ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে অনেককে স্থানীয় এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রাতে নিরাপত্তাহীনতায় গেরুয়া এলাকায় না যেতে পেরে বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা রাতে হল খুলে দেওয়ার দাবি তোলেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা নাকচ করে দিয়ে হোটেল ভাড়া করে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো জাবি ক্যাম্পাস ও হল বন্ধ রয়েছে।
হল খোলার দাবিতে জাবি শিক্ষার্থীরা আজ শনিবার সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনার পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
রাতের ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, কয়েকদিন আগে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে জাবি শিক্ষার্থীদের ঝামেলা হয়। সমস্যা সমাধানে শুক্রবার বিকেলে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে আলোচনা করতে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী। আলোচনা চলাকালে আবার কথা কাটাকাটি হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গেরুয়া বাজারের একটি ভবনে আটকে রাখা হয়। পরে স্থানীয়রা তাঁদের মারধর করেন। এতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অভিষেক মণ্ডল, কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যালেক্সসহ তিনজন আহত হন। এ সময় শিক্ষার্থীদের পাঁচটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে স্থানীয়রা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান রাতে বলেন, ‘আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশ আনার জন্য আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করছি।’
আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলছি।’