ছাত্রীরা এগিয়ে
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এতে পাসের শতকরা হার ৮২ দশমিক ২০। এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলে ছেলেদের থেকে পাসের হার এবং জিপিএ ৫ দুই দিক থেকে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে।
আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির হাতে পরীক্ষার ফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেন শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানরা। পরে সেখানেই ফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন মন্ত্রী।
জিপিএ ৫ এগিয়ে মেয়েরা
এবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের ছাত্রছাত্রীভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, জিপিএ ৫ প্রাপ্ত ছাত্রীর সংখ্যা হলো ৫৩ হাজার ৪৮৪ জন। ছাত্ররা জিপিএ পাঁচ পেয়েছে ৫২ হাজার ১১০ জন। ছাত্রদের চেয়ে ছাত্রীরা এক হাজার ৩৭৪ জন জিপিএ ৫ বেশি পেয়েছে। এ বছর জিপিএ ৫ পেয়েছে মোট এক লাখ পাঁচ হাজার ৫৯৪ জন।
পাসের হারেও এগিয়ে মেয়েরা
প্রতিবারের মতো এবারও পাসের হারের দিক থেকে মেয়েরা এগিয়ে রয়েছে। এ বছর ছাত্র পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল আট লাখ ২০ হাজার ৯৮০ জন। উত্তীর্ণ হয়েছে ছয় লাখ ৭৩ হাজার ২৬২ জন। শতকার পাসের ৮২ দশমিক শূন্য ১ ভাগ। অপরদিকে মোট ছাত্রী পরীক্ষার্থী ছিল আট লাখ ৭৩ হাজার হাজার ৬৭২ জন। তার মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে সাত লাখ ২৯ হাজার ৮৯৫ জন। শতকরা পাসের হার ৮৩ দশমিক ৫৪ ভাগ। এ বছর পরীক্ষায় ছাত্রের তুলনায় ৫২ হাজার ৬৯২ জন ছাত্রী বেশি অংশগ্রহণ করেছে এবং ৫৬ হাজার ৬৩৩ জন ছাত্রী বেশি পাস করেছে; ছাত্রের তুলনায় ১ দশমিক ৫৩ ভাগ ছাত্রী বেশি পাস করেছে।
গত কয়েক বছরেও ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা ফলে এগিয়ে ছিল। ২০১৮ সালের পরীক্ষায় দেখা যায়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা ২ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি পাস করেছে। ছেলেদের পাসের হার ৭৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। মেয়েদের পাসের হার ৭৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ।
২০১৭ সালেও এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ১০ শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ছিল ৮০ দশমিক ৩৫ শতাংশ। এর মধ্যে ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ ছাত্র এবং ৮০ দশমিক ৭৮ শতাংশ ছাত্রী পাস করে।
প্রথা অনুসারে প্রতিবার ফল ঘোষণার দিন সকালে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফলের সারসংক্ষেপ তুলে দেওয়া হয়। পরে দুপুরের দিকে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ফলের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু এবারে প্রধানমন্ত্রী লন্ডন সফরে থাকায় শিক্ষামন্ত্রীর হাতেই ফল তুলে দেওয়া হবে। তবে ফল প্রকাশ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে বাণী পাঠ করে শোনান শিক্ষামন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী ফোনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথাও বলেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় মোট ২১ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৩ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ১০ লাখ ৬৪ হাজার ৮৯২ জন ছাত্রী ও ১০ লাখ ৭০ হাজার ৪৪১ জন ছাত্র।
শিক্ষার্থীরা মোট আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড এবং মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের অধীনে এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অবতীর্ণ হয়। বোর্ড অনুযায়ী শতকরা পাসের হার—ঢাকা বোর্ডে ৭৯.৬২, রাজশাহী ৯১.৬৪, বরিশাল ৭৭.৪১, কুমিল্লা ৮৭.১৬, সিলেট ৭০.৮৩, দিনাজপুর ৮৪.১০, যশোর ৯০.৮৮ এবং চট্টগ্রামে ৭৮.১১ ভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
এর বাইরে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৭২.২৪ ও মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে ৮৩.০৩ শতাংশ শিক্ষার্থী পাস করেছে।
দেশের ১০টি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে গত ২ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ মার্চ পর্যন্ত ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হয়।
কয়েক বছর ধরে পরীক্ষা শেষের ৬০ দিনের মধ্যে পাবলিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হচ্ছে। আগামী ৯ মে পরীক্ষা শেষের ৬০তম দিন পূর্ণ হবে। এবার তার তিন দিন আগেই ফল প্রকাশ করা হলো।