উত্ত্যক্ত করার অভিযোগে ৬ ছাত্রকে পেটাল ছাত্রলীগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয় ছাত্রকে পিটিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আজ শনিবার রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজিলাতুন নেসা হলের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফিরোজ। তাঁকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনায় আহত অন্যরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বিপ্লব (বাংলা বিভাগ), জামি (নৃ বিজ্ঞান বিভাগ), অনিক (ইতিহাস বিভাগ), বাঁধন (নৃবিজ্ঞান বিভাগ) ও পলাশ (আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ)।
এ ঘটনায় আহত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পলাশ বলেন, “রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় আমরা বন্ধুরা বিভিন্ন কথা বলে মজা করছিলাম। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজীব তাঁর বান্ধবীকে নিয়ে রিকশায় করে যাচ্ছিলেন। আমাদের কথা শুনে তিনি রিকশা থেকে নেমে আসেন এবং পরিচয় জিজ্ঞাসা করেন। পরে বঙ্গবন্ধু হলের শিক্ষার্থী শুনে রাজীব ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হলকে অনেক ছাড় দিয়েছি। আর কোনো ছাড় নয়।’ বলে মারধর শুরু করেন।”
কিছুক্ষণ পরে শহীদ সালাম-বরকত হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান শুভ, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক আবু সুফিয়ান চঞ্চল ও ছাত্রলীগকর্মী সাদ্দাম এসে আরেক দফা তাঁদের মারধর করেন বলেও অভিযোগ করেন পলাশ।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ফজিলাতুন নেসা হলের সামনে ওই ছয়জন ইভটিজার সন্ধ্যার পর থেকেই মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে আসছিল। আজ সন্ধ্যার পর আমি রিকশায় করে যাওয়ার পথে এই দৃশ্য দেখে থামি। পরে ওই ইভটিজারদের ধরে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ইভটিজারদের চড়-থাপড় দেয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মেহেদী ইকবাল ইশরারের কাছে ওই ইভটিজাররা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চান।’ বলে তিনি দাবি করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মেহেদী ইকবাল ইশরার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘রাত ৯টার দিকে প্রক্টর স্যার আমাকে ফোনে ইভটিজিং সংক্রান্ত খবরটি জানান। এরপর আমি ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজীবসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। আমি ঘটনা জানতে চাইলে আহত দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ফিরোজ জানান, ‘রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বন্ধুরা একে অন্যকে উদ্দেশ্য করে চটুল ও অশ্লীল বাক্যবিনিময় করছিল। রাজীব (ছাত্রলীগ নেতা) এ সময় রিকশায় করে যাচ্ছিল এটা তারা লক্ষ করেনি। রাজীব রিকশা থেকে নেমে এসে তাদের মারধর করে। পরে আরো কিছু ছাত্র এসে তাঁদের আরেক দফা মারধর করে।’ পরে অবশ্য মার খাওয়া ছাত্ররা নিজেদের ভুল স্বীকার করে সবার উপস্থিতিতে ক্ষমা চায়।
শহীদ সালাম-বরকত হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান শুভ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘একজন ছাত্রীকে টিজ করার অপরাধে জুনিয়ররা উত্ত্যক্তকারীদের হালকা চড়-থাপড় দিয়েছে।’
এদিকে এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ দুই হলের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা নিজ হলের সামনে অবস্থান নিয়ে আছেন।