ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ভাগ্য বদল সায়েমের
ডিজিটাল মার্কেটিং এবং এফ কমার্স বিজনেস করে খুব অল্প সময়ে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন রংপুরের তরুণ আবু সায়েম। তিনি নিজেকে একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।
মাত্র ১৩ বছর বয়সে বাবাকে হারান সায়েম, পুরো পরিবার পড়ে অর্থনৈতিক দুরবস্থায়। এরপর ইন্টারনেটে ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন ওয়েসাইট ঘেটে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে ধারণা ও দক্ষতা অর্জন করেন। ঠিক কয়েক বছর পর ফেসবুক থেকেই খুলে যায় তার আয়ের পথ, কাঁধে তুলে নেন পুরো পরিবারের দায়িত্ব। এখন সায়েমের মাসিক আয় দুই লাখ টাকারও বেশি।
সায়েমের সহযোগিতায় এফ কমার্স বিজনেস করে এখন অনেকের আয়ের পথ খুলেছে। তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে সায়েম গড়ে তুলেছেন ইনবক্স আইটি ও সায়েম একাডেমি নামে দুটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।
এফ কমার্সে তরুণদের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে সায়েম বলেন, ‘ফেসবুক হচ্ছে পৃথিবীর বড় সোশ্যাল মিডিয়া। এখান থেকে প্রতিদিন ১৫ লাখ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে এবং গড়ে প্রত্যেক ব্যবহারকারী ২০ মিনিট করে ফেসবুকে ব্রাউজিং করে। বোঝাই যাচ্ছে, নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য ফেসবুকের বিকল্প নেই। আমি মনে করি, খুব দ্রুত সফল হওয়ার জন্য নতুন উদ্যোক্তাদের ফেসবুক মার্কেটিংয়ে ফোকাস দেওয়া উচিত।’
সায়েম এখন শহরের পাশাপাশি নিজের গ্রামের তরুণদের ফ্রিল্যান্সিং শেখানো শুরু করেছেন। এখান থেকে অ্যাফিলিয়েটেড মার্কেটিং, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন), লিড জেনারেশন, সিপিএ মার্কেটিং, কনটেন্ট মার্কেটিং ও সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংসহ আউটসোর্সিংয়ের বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে তরুণ-তরুণীরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে আবু সায়েম। তার বাবা ছিলেন স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম এবং মা আরজিনা বেগম গৃহিণী। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে সায়েম পঞ্চম।
আবু সায়েম বলেন, ‘পরিবারে আমরা দুই ভাই ও চার বোন। কিন্তু আমার দায়িত্ব একটু বেশি। মাস শেষে প্রায় দুই লাখ টাকা আয় করি। এ আয় থেকে পরিবারের দেখভাল এবং ছোট ভাইয়ের পড়ালেখার খরচ চালাচ্ছি। ইতোমধ্যে বড় বোনদের বিয়ে দিয়েছি।
বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখার আগ্রহের কথা জানিয়ে সায়েম বলেন, ‘বেকারত্ব একটা অভিশাপ। আমি চাই এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা অনলাইন বিজনেস শিখুক। শুধু পড়াশোনা না করে পড়ালেখার সঙ্গে নিজেরা কিছু করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিং সুবিধা নেওয়া উচিত। প্রতিদিন আট থেকে ১০ ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কাজ করতে পারলে বেকারত্ব ঘোচানো সম্ভব।’