গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
আলোচিত সংসদীয় গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। সকাল সাড়ে আটটা থেকে ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রে এই ভোটগ্রহণ শুরু হয়। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি থাকতে দেখা গেছে। সতর্ক অবস্থায় আছে আইনশৃঙ্খলা বহিনীর সদস্যরা। আর ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে ইসির উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং সেল।
গত ২৩ জুলাইয়ে সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়ার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়। গত ১২ অক্টোবর এই আসনের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অনিয়মের কারণে ভোট বাতিল করে নির্বাচন কমিশন। এরপর অনিয়ম ও দায়িত্ব অবহেলার প্রমাণ মেলায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশের পাঁচ উপপরিদর্শক (এসআই) ও ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাসহ ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে বরখাস্তসহ নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ আইন অনুসারে বিভিন্ন মেয়াদের শাস্তির সুপারিশ করে ইসি, যা বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। পরে গত ৬ ডিসেম্বর এই আসনের উপনির্বাচনের পুনঃভোটের জন্য ৪ জানুয়ারি ধার্য করে নির্বাচন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানটি। সে অনুযায়ী আজ সকালে ভোটগ্রহণ শুরু হয়, যা চলবে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত।
এই উপনির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন—আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্পধারা মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্রপ্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। যদিও, গত ২৫ ডিসেম্বর আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ বগুড়ায় এক সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় এই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন।
ইসির যুগ্ম সচিব ও জনসংযোগ শাখার পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান গতকাল মঙ্গলবার বলেন, ‘সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতির পাশাপাশি ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রে এক হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে, যা পর্যবেক্ষণের জন্য উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করেছে ইসি। প্রতিটি সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ থেকে ১৭ জন এবং ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ থেকে ১৮ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। এ ছাড়া পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের ছয়টি ভ্রাম্যমাণ ও চারটি স্ট্রাইকিং ফোর্স ভোটের মাঠে থাকবে।’
এ উপনির্বাচনে ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএম ভোটগ্রহণ করার জন্য ১৪৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৯৫২ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এক হাজার ৯০৪ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।
ইসি সূত্র জানিয়েছে, মোট ভোটার তিন লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন। নিরাপত্তার জন্য প্রতি কেন্দ্রে দুজন পুলিশ কর্মকর্তাসহ চারজন পুলিশ সদস্য এবং ১২ জন আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করছেন। তবে, ফুলছড়ি উপজেলার চরাঞ্চলের ১০টি কেন্দ্রে ১০ করে পুলিশ সদস্য ও ১৬ জন করে আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করবেন।
একইভাবে সাঘাটা উপজেলার চরাঞ্চলের তিনটি কেন্দ্রেও ১০ জন করে পুলিশ সদস্য ও ১৬ জন করে আনছার ও ভিডিপি দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসি জানিয়েছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য র্যাবের ৯টি টিম, চার প্লাটুন বিজিবি ও অস্ত্রধারী আনসার সদস্য ছাড়াও এক হাজার ২৮৫ জন পুলিশ নিরাপত্তা প্রদানে দায়িত্ব পালন করছেন।
গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। প্রতি ইউনিয়নে একজন করে মোট ১৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও দুজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।