নিজের ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ নিয়ে যা বললেন রুনা খান
পারিবারিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত, খুনসুটি, হাস্যরস—কী নেই। বাস্তবের ঘটনাগুলো যখন পর্দায় ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয় আর তাতে নিজের জীবনের সঙ্গে প্রায় অবিকল মিল খুঁজে পান দর্শক, তখন তা নিশ্চয়ই প্রিয় হয়ে উঠবে।
আর তাই দর্শকপ্রিয়তার শীর্ষে উঠছে বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভিতে প্রচারিত ধারাবাহিক নাটক ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’। দর্শক দেখছেন তাঁদের পারিবারিক জীবনের সংকটের নানা দিক। পর্দার চরিত্রের সঙ্গে পাচ্ছেন নিজেদের মিল। তাই হু হু করে বাড়ছে দর্শকসংখ্যা। এরই মধ্যে ইউটিউব, ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম মিলিয়ে শুধু অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ৫০ কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে ধারাবাহিকটি।
এ নাটকে ‘সালমা ভাবি’ চরিত্রে অভিনয় করছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনয়শিল্পী রুনা খান। আর অন্যান্য চরিত্রের মতো তাঁর চরিত্রও তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ভক্তদের অনেকে তো তাঁকে সালমা ভাবি বলেই ডাকেন! সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা বলেন এ অভিনেত্রী। জানান, ধারাবাহিকটি নিয়ে তাঁর অভিজ্ঞতা। ব্যক্তিজীবনের কথাও জানাতে ভোলেননি রুনা।
নাটকের অন্যতম জনপ্রিয় চরিত্র ঝুমুর। ঝুমুরকে ভালোবাসেন পারভেজ। কিন্তু ঝুমুরকে রায়হানের সঙ্গে বিয়ে দিতে চান তাঁর মা, অর্থাৎ শেফালি খালা। আর সালমা ভাবির ননদ ঝুমুর। সালমা ভাবি পারভেজকে যেমন পছন্দ করেন, তেমনি ভালোবাসেন দেবর রায়হানকেও। ঝুমুরের বিয়ে নিয়ে কী ভাবছেন সালমা ভাবি? পারভেজ বা রায়হান দুজনকেই তো ভালোবাসেন সালমা ভাবি। কী করবেন তিনি? ঝুমুরের বিয়ে নিয়ে অন্তর্জালেও চলছে নানা জল্পনা। কেউ পারভেজের পক্ষে, কেউ রায়হানের। এ নিয়ে কথা বলেন অভিনেত্রী রুনা খান।
দেবর রায়হানের সঙ্গে কি ঝুমুরকে বিয়ে দিতে চান? উত্তরে রুনা খান বলেন, ‘আমি তো ঝুমুরকে ভীষণ ভালোবাসি। অনস্ক্রিন বা অফস্ক্রিন—ঝুমুর এত মিষ্টি একটা মেয়ে, এত লক্ষ্মী একটা মেয়ে, এত চমৎকার একটা মানুষ, ওকে আসলে ভালো না বেসে উপায় নেই। আমি শুধু নই, দেশের অনেক ভক্ত-দর্শক ঝুমুরকে ভালোবাসেন। আমি যেহেতু বেশি ভালোবাসি, আমার সেই সুযোগটা যেহেতু আছে, ঝুমুরকে আমার কাছে কাছেই রাখতে চাই। এখন সেটা কী উপায়ে যে রাখব, রায়হানের বউ করে, না কী উপায়ে, সেটা...।’ বলেই হাসলেন রুনা।
নাটকে ঝুমুরের এক পা খোঁড়া। তাতেও জা হিসেবে ঝুমুরকে মানতে বিন্দুমাত্র আপত্তি নেই সালমা ভাবির। রুনা খান বলেন, ‘তাতে কিচ্ছু যায় আসে না। এটা ঝুমুরের একটা শারীরিক সমস্যা। শারীরিক সমস্যা বলতে... আজকে আমরা কোনো ভবিষ্যৎ জানি না। আজ আমি সুস্থ আছি, কাল সিঁড়ি দিয়ে পড়ে পা ভেঙে যেতে পারে। পরশু থেকে আমিও খোঁড়া হয়ে যেতে পারি।’
নাটকে পারভেজ ওরফে কালা জইস্যাকে খুব স্নেহ করে সালমা ভাবি। রুনা খান বললেন, ‘এত্ত কিউট সে!’ যা হোক, এ নাটক নিয়ে রুনা খানের প্রশংসা পাওয়ার অভিজ্ঞতা কম নয়। ঘরবার হলে অনেকেই তাঁর সম্পর্কে জানতে চান, ঝুমুর সম্পর্কে জানতে চান। একবার এক পুলিশ কর্মকর্তা তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ঝুমুরের কি আসলেই পায়ে সমস্যা? পারভেজকে তিনি খুব ভালোবাসেন, এটা যেন রুনা খান একটু বলে দেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘আপু, আপনাকে খুবই ভালো লাগে। কিন্তু আপনার সামনে বলতে লজ্জা পাচ্ছি।’ এ সময় রুনা তাঁকে বলেন, ‘লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আমারও খুবই ভালো লাগল।’ এমন নানা অভিজ্ঞতার ঝুড়ি পূর্ণ রুনা খানের।
ব্যক্তিজীবনে ছোট ফ্যামিলি রুনা খানের। অভিনেত্রীর ভাষায়, ‘আমার এক মেয়ে রাজেশ্বরী আর রাজেশ্বরীর বাবা। এই নিয়েই আমার পরিবার। আর আমার মা আছেন, বাবা আছেন। আমার শাশুড়ি আছেন।’ নাটকে ফ্যামিলি ক্রাইসিস থাকলেও ব্যক্তিজীবনে তাঁর কোনো ফ্যামিলি ক্রাইসিস নেই।
অভিনেত্রীর ভাষায়, ‘রুনার পরিবারে সেভাবে কোনো ক্রাইসিস নেই। বিশ্বাস করেন, আমার পরিবারে আসলে আমি মায়ের একমাত্র মেয়ে। আমার বর হচ্ছে শাশুড়ির একমাত্র ছেলে। খুবই আদরে-আহ্লাদে গুরুত্ব পাওয়া মানুষ আমরা। আমিও একমাত্র মেয়ের মা। আমি পরিবারে খুবই গুরুত্ব পাওয়া একজন মানুষ। যেখানে সবাই আমাকে ভালোবাসে, সেখানে ক্রাইসিস থাকার কোনো জায়গা নেই।’
পুরো সাক্ষাৎকার দেখুন ভিডিওতে :
শুধু টেলিভিশনের পর্দায় ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’ দেখতে গৃহবাসী হচ্ছেন না দর্শক, অনলাইনেও দেখে নিচ্ছেন। এরই মধ্যে ধারাবাহিকটির ৯০ পর্ব সম্প্রচার হয়েছে।
পারিবারিক টানাপোড়েনের গল্প নিয়ে ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’-এর রচনাকার মারুফ রেহমান। পরিচালনা করছেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ।
সপ্তাহে দুদিন, প্রতি মঙ্গল ও বুধবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে এনটিভিতে প্রচারিত হচ্ছে ‘ফ্যামিলি ক্রাইসিস’। নাটকটিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন—শহিদুজ্জামান সেলিম, শর্মিলী আহমেদ, রুনা খান, রোজী সিদ্দিকী, মুনিরা ইউসুফ মেমী, মনিরা আক্তার মিঠু, সোহেল খান, শবনম ফারিয়া, শামীম হাসান সরকার, মুকিত জাকারিয়া, মিথিলা, সানজানা সরকার রিয়া, সারিকা সাবা, জিয়াউল হক পলাশ, এম এন রাজু, শিশুশিল্পী রাইসাসহ অনেকে। এ ছাড়া নাটকটি দেখা যাচ্ছে ইউটিউব, ফেসবুকসহ অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মেও।