ডায়েট ছাড়া কী ওজন কমানো সম্ভব ?
ওজন কমানোর জন্য প্রথমেই আমাদের মাথায় আসে ডায়েটিং। আমাদের মস্তিস্ক ধরেই নেয় যে, খাওয়া বাদ দিলেই আমরা ওজন কমাতে পারব। আজকাল ওজন কমানোর জন্য কিটো ডায়েট, ক্রাশ ডায়েট থাকছেন। হয়তো এসব ডায়েট করে আপনি কয়েক দিনেই কয়েক কিলো কমাতে পারবেন। কিন্তু আপনার শরীরের জন্য এটি অস্বাস্থ্যকর। শরীরে বিভিন্ন ঘাটতি দেখা দেয়। ওজন কমাতে হলে শুধু সেদ্ধ খাবার খাওয়ার দরকার নেই। জীবনধারায় সামান্য পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি অতিরিক্ত ওজন কমাতে পারবেন।
ডায়েট নাকি স্বাস্থ্যকর খাবার ?
ডায়েটিং শব্দটি শোনার সাথে সাথেই অনেকে ধরে নেয় যে, হয়ত খালি সালাদ আর সেদ্ধ সবজি খেতে হবে। এ জন্য অনেকেই দূরে সরে যায়। আসলে ডায়েটিং বলতে বোঝায় এমন খাবার না খাওয়া যা ওজন বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা রাখে। তার মানে এই নয় যে , আপনাকে ক্ষুধার্ত থাকতে হবে। এমনকি আপনার খাদ্য তালিকা থেকে সুস্বাদু খাবারও বাদ দিতে হবে না। ডায়েটিংকে কঠিন কিছু না ভেবে স্বাস্থ্যকর খাবারের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখুন। ডায়েট করলে ফাস্টফুড, তেলেভাজা খাবার, মিষ্টিজাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। স্ন্যাক্সের জন্য সিঙ্গারা, সমুচা না খেয়ে ফ্রুট সালাদ খেতে পারেন। বিকেলে বাইরে থেকে খাবার না খেয়ে বরং বাসাতে বসেই কিছু স্বাস্থ্যকর নাস্তা বানিয়ে ফেলুন। এভাবে ধীরে ধীরে সুষম খাদ্য খাবার চেষ্টা করুন। এটি আপনাকে আশ্চর্যজনক ফলাফল দিবে।
জীবনধারা পরিবর্তন
ওজন কমানোর জন্য জীবনধারায় পরিবর্তন আনুন। আমাদের সবার শরীরে বিভিন্ন ধরণের ভিটামিন, খনিজ, প্রোটিন, ফাইবার, কার্বোহাইড্রেট এবং এমনকি ভাল চর্বি প্রয়োজন। শরীরের এই প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে সুষম খাদ্য খেতে হবে। মনে রাখবেন যে, একটি খাদ্যের লক্ষ্য হল শরীরকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করা। সুস্বাস্থ্য এবং সুস্থতাকে সমর্থন করা। তাই প্রতিদিনই চেষ্টা করুন সব উপাদান আপনার শরীরকে দিতে। খাবার তালিকাটি এমনভাবে সাজান যেন সব উপাদান থাকে। সকালে নাস্তা ঠিক সময় করুন। দুই ঘন্টা পরপর হালকা কিছু খান। একবারে বেশি খেয়ে ফেলবেন না। প্রচুর পানি পান করুন।
যেসব খাবার অবশ্যই খাবেন
আপনি যদি রুটি খেয়ে থাকেন, চেষ্টা করুন লাল আটার রুটি খাওয়ার। ভাতের ক্ষেত্রেও লাল চাল বেছে নিন। পাশাপাশি আপনার প্রোটিন গ্রহণের দিকেও নজর রাখুন। পনির, পালং শাক, ডাল প্রোটিনের উৎস। ডিমের সাদা অংশ এবং মুরগির বুকের মাংসর মতো চর্বিহীন প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবারগুলো বেছে নিন। চিনিযুক্ত লেমনেডের বদলে তাজা ফলের রস পান করুন। বাদাম, আখরোট, কুমড়ার বীজ আপনার ডায়েটে রাখুন। অবশ্যই প্রতিদিন ২-৩ টি ফল রাখার চেষ্টা করুন।
নিয়মিত ওয়ার্কআউট
খাদ্যতালিকার পাশাপাশি শরীরকে সচল রাখতে শারীরিক পরিশ্রম অপরিহার্য। ওয়ার্কআউট শুধুমাত্র রক্ত সঞ্চালনই বাড়ায় না। বরং আপনাকে কম অলস বোধ করাবে। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০-৪০ মিনিট ব্যায়াম করুন। স্কিপিং, যোগব্যায়াম, সাইক্লিং, সাঁতারের মত শরীরচর্চাগুলো করুন। স্বাস্থ্যকর খাদ্যভাস আর নিয়মিত ব্যায়াম আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের জন্য বিশাল ফলাফল অর্জন করবে।
সূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া