আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হলো সাকিব’স ডাইনের
ঘড়ির কাঁটায় তখন ৮টার কিছু বেশি। বনানীর ১১ নম্বর রোডে অবস্থিত 'সাকিব'স ডাইন' রেস্তোরাঁয় উপস্থিত হলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের নক্ষত্র সাকিব আল হাসান ও তাঁর স্ত্রী শিশির। কারণ আজ তাঁদের রেস্তোরাঁর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু। ফিতা বা কেক না কেটে মুখেই এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা ঘোষণা করলেন সাকিব।
অনেকদিন আগে থেকেই এর সফট ওপেনিংয়ের মাধ্যমে চলছিল রেস্টুরেন্টটি। প্রায় তিন মাস পর গতকাল ৮ আগস্ট আনুষ্ঠানিক এর যাত্রা শুরু হলো। এ সম্বন্ধে সাকিব আল হাসান বলেন, ‘আপনারা তো জানেন অনেকদিন ধরেই রেস্টুরেন্টটি চলছে। এতদিন ঘোষণা দিয়ে ওপেন করিনি, কারণ ব্যবসায় আমি এবারই প্রথম। বুঝে ওঠার একটু সময় লেগেছে। আগে বোঝা, অভিজ্ঞতা অর্জন করা এবং যদি ভুল হয় সেটা দেখা। এসবের জন্যই সময় লেগেছে। এটাই হয়তো আমার জন্য সঠিক সময়, তাই ওপেন করার ঘোষণা দিচ্ছি। আপনাদের সবার কাছে ব্যবসায়ও যেন সফল হই, তার জন্য দোয়া চাইছি।’
নিজের রেস্তোরাঁর খাবার সম্বন্ধে সাকিব বলেন, ‘খাবার মাশাল্লাহ ভালো হবে। আমি খেয়ে দেখেছি। এখানে যাঁরা আসবেন, তাঁরা সন্তুষ্ট হবেন, বাকিটা তো আপনাদের ওপর।’ তিনি আরো বলেন, ‘এখান (রেস্টুরেন্ট) থেকে আমার একটা ইচ্ছা আছে সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন করার। লাভের একটি অংশ সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য ব্যয় করার ইচ্ছা থেকেই এটি করা। এ ছাড়া এই ধরনের মানুষকে মাসে একবার সকালের নাশতা কিংবা দুপুরে খাওয়ানোর ইচ্ছা রয়েছে।
অনেকের ইচ্ছা থাকলেও কিছু আয়োজন করার সামর্থ্য নেই; কিন্তু আমার এখানে তাদের জন্য আয়োজনের ব্যবস্থা করব।’
রেস্তোরাঁ সাজানোর কাজটা কে করেছে? জানতে চাইলে শিশির বলেন, ‘আমি তো দেশের বাইরে ছিলাম। এরপর দেশে এসে একটু সাহায্য করেছি শুধু, তেমন কিছু করা হয়নি আসলে।’ সাকিব কথা কেড়ে নিয়ে বলেন, ‘ওপরের তলা বলতে গেলে সবই ওর (শিশির) পরিকল্পনায় করা। অন্যরাও কাজ করেছে; কিন্তু মূল পরিকল্পনাটা ওরই ছিল।’ এ বিষয়ে শিশির বললেন, ‘ব্যবসায়ী হিসেবে সাকিব খুব ভালো অলরাউন্ডার।’ এই অনুষ্ঠানে আরো একটি ঘোষণা দিলেন সাকিব তা হলো, আগামী নভেম্বরে বাবা হতে যাচ্ছেন তিনি।
সাকিবের রেস্তোরাঁয় এ সময় উপস্থিত হয়েছিলেন জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। তাঁদের মধ্যে অন্যতম বিদ্যা সিনহা মিম, নওশীন, হিল্লোল, দীপা খন্দকার, আফরিন সামিয়া,বিজরী বরকতউল্লাহ,তাসনুভা এলভিন,শ্রাবণ্য তোহিদা। আরো ছিলেন জনপ্রিয় পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও তাঁর স্ত্রী তিশা।
তারকাদের পাশাপাশি ছিলেন খেলোয়াড়রাও। ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, সৌম্য সরকার, সাবেক ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিম। এ ছাড়া এসেছিলেন জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।
পুরো রেস্তোরাঁ যেন সাজানো হয়েছে স্পোর্টস জাদুঘর স্টাইলে। দেয়ালটা মাঠের ঘাসের মতো সবুজ টার্ফে তৈরি। একপাশে ব্যাটিংয়ের চিত্রকর্ম, অন্যপাশে সাকিব আল হাসানের কলকাতা নাইট রাইডার্স ও বাংলাদেশ দলের দুটি জার্সি।
দ্বিতীয় তলায় আরো একটি রুম রয়েছে। ওই রুমে দেয়ালে টানানো ১০টি টেস্ট খেলুড়ে দেশের জাতীয় পতাকা। এ ছাড়া, ব্যাট, গ্লাভস, হেলমেটও শোভা পাচ্ছে দেয়ালে। সরাসরি খেলা দেখার জন্য থাকছে দুটি প্রজেক্টর ও টিভি, যা আলাদাভাবে সবার নজর কাড়বে।