কেমন যাবে জাতীয় নেতৃবৃন্দের নতুন বছর?
বাংলাদেশের রাজনীতি গত বছর মোটামুটি উত্তপ্তই ছিল। যদিও অনেক দল নিষ্ক্রিয় থেকেছে, তার পরও দেশটির নেতৃবৃন্দ বেশ ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন। বিরোধী দলের নেতাদের পরস্পরের মধ্যে সরাসরি দেখা না হলেও তির্যক বাক্যবিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। নির্বাচন ও সহিংসতা ছাড়াও রাজনীতির ময়দান গরম ছিল জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে। তো, নেতৃবৃন্দের কেমন যাবে নতুন বছর?
বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, সাবেক রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিরোধীদলীয় নেতার ২০১৬ সাল কেমন যাবে, সেটাই বলা হয়েছে এই রচনায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মতারিখ ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ। পাশ্চাত্য জ্যোতিষে তিনি তুলা রাশির জাতিকা। বছরের প্রারম্ভে তুলা রাশির দ্বাদশে রাহু অবস্থান করছে। দশমে বক্রিবৃহস্পতি এবং দ্বিতীয়ে শনি অবস্থান করছে। ষষ্ঠে ইউরেনাস ও কেতু অবস্থান করছে। চতুর্থে মঙ্গল এবং পঞ্চমে নেপচুন রয়েছে। গ্রহগুলোর উপরোক্ত অবস্থানের কারণে প্রধানমন্ত্রীর শরীর-স্বাস্থ্য এ বছর ভালো যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর শরীরের নিচের অংশে বিশেষত, পায়ের গোড়ালির বা হাঁটুতে ব্যথা দেখা দিতে পারে। মাঝেমধ্যে মাথাব্যথা ও চক্ষু-সংক্রান্ত সমস্যায় ভুগতে পারেন। দশমে বৃহস্পতি থাকার ফলে রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর খ্যাতি-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পাবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিবিধ ফোরামে তিনি সমাদৃত হবেন। এ বছর তিনি কোনো সম্মানজনক পুরস্কারে ভূষিত হতে পারেন। ষষ্ঠে কেতুর অবস্থানের ফলে গোপন শত্রুতা বৃদ্ধি পাবে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র হতে পারে। বছরের শুরু থেকে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার ব্যাপারে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। প্রধানমন্ত্রীর বিদেশ ভ্রমণ গত বছরের তুলনায় এ বছর বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। অতিরিক্ত পরিশ্রমের জন্য তিনি খুব ক্লান্তি বোধ করবেন। ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সহকর্মীদের কারো কারো সঙ্গে তাঁর কোনো বিষয়ে মতবিরোধ সৃষ্টি হতে পারে। মতবিরোধ ভুল বোঝাবুঝিতে পর্যবসিত হতে পারে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম থেকেই সতর্ক থাকা প্রয়োজন। অন্যথায় ষড়যন্ত্রকারীরা এর সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করতে পারে।
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া
সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্মতারিখ আমার জানামতে ১৯৪৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই তাঁর জন্ম। জন্মস্থান পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলায়। তথ্যসূত্র তাঁর মন্ত্রিসভার একজন মাননীয় মন্ত্রী এবং তাঁর জেঠাতো ভাই মরহুম মোহাম্মদ হোসেন মজুমদার (পীরজাদা শিপন ভাই)। সে হিসেবে তিনি কন্যা রাশির জাতিকা। কন্যা রাশিতে রাহুর অবস্থানের কারণে খালেদা জিয়ার শরীরে নিচের অংশ বিশেষত, পায়ের সমস্যা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা আছে। সপ্তাহে কেতু ও ইউরেনাসের অবস্থানের জন্য বিভিন্ন ধরনের আইনগত জটিলতা বৃদ্ধি এবং অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটতে পারে। দ্বাদশে বৃহস্পতির অবস্থানের কারণে বারবার জয়াধিক্য দেখা দিতে পারে। দলের অভ্যন্তরে তাঁর নেতৃত্ব প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে ওঠার আশঙ্কা আছে। দলকে ঐক্যবদ্ধ ও সুসংহত করার ক্ষেত্রে এবং সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদীদের সঙ্গে সখ্যের বিষয়ে খালেদা জিয়ার ভূমিকা নিজের দলের ভেতরেই ব্যাপকভাবে সমালোচিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। ক্ষমতায় থাকাকালীন তাঁর জ্যেষ্ঠ পুত্র তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ও অন্যান্য মামলার ভেতরে অন্তত একটি মামলার এ বছর রায় হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এবং সে রায় খালেদা জিয়ার পক্ষে নাও যেতে পারে। তবে খালেদা জিয়া এ বছর দল গোছানোর কাজে অধিকতর মনোযোগী হতে পারেন।
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ
সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় পার্টির নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জন্মতারিখ ২০ মার্চ, ১৯২৯। পাশ্চাত্য জ্যোতিষে তিনি মীন রাশির জাতক। ২১ মার্চ চন্দ্র মেষে প্রবেশ করবে। সেদিক থেকে বলা যায়, মেষ ও মীনের ক্রান্তিকালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন। মীন রাশিতে কেতু ও ইউরেনাসের অবস্থানের কারণে তাঁর রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনে অনভিপ্রেত ও অপ্রত্যাশিত ঘটনাবলি ঘটার আশঙ্কা আছে। তাঁর শরীর-স্বাস্থ্য খুব একটা ভালো যাবে না। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সহকর্মীদের অনেকের সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। দলের অভ্যন্তরে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পাওয়ার আশঙ্কা আছে। অসুস্থতার জন্য একাধিকবার তাঁর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আশঙ্কা আছে। শরীর-স্বাস্থ্য সম্পর্কে এ বছর তাঁকে অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে। অন্যথায় বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় ঘটতে পারে।
বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ
জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের জন্ম ১৯ জুলাই, ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে। পাশ্চাত্য জ্যোতিষে তিনি কর্কট রাশির জাতিকা। জলজ রাশি কর্কটের প্রভাবে প্রকৃতিগতভাবে তিনি কিছুটা আবেগপ্রবণ এবং অভিমানী প্রকৃতির। রাজনৈতিকভাবে বছরটি তাঁর জন্য শুভ সম্ভাবনাময়। শরীর-স্বাস্থ্য মোটামুটি ভালো থাকলেও মাঝেমধ্যে ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। বার্ধক্যজনিত কোনো জটিল ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারেন। জাতীয় সংসদে তাঁর বক্তব্য ও ভূমিকা প্রশংসিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ বছর একাধিকবার তাঁর বিদেশযাত্রার সম্ভাবনাও রয়েছে। অন্যান্য দিক ভালো যাবে।