পাঁচ উপায়ে শিশুদের স্মার্টফোনের আসক্তি কমান
স্মার্টফোন ছাড়া একটি দিনও কাটানো সম্ভব না। বিল পরিশোধ ,ইমেইল চেক, গেইম খেলা থেকে শুরু করে সব কাজেই স্মার্টফোনের ব্যবহার বেড়েই চলছে। এমনকি বন্ধু, পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে সংযোগ স্থাপন করার ক্ষেত্রে এর ভূমিকা অপরিসীম। আজকাল শিশুরা জন্মের পরই মা-বাবার হাতে দেখছে স্মার্টফোন। খেতে গেলে, কান্না করলে তাদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ফোন। তাই তারা বড় হওয়ার সাথে সাথে সহজেই এই ডিভাইসে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ভয়েস বার্তা, মন্তব্য লেখা, বন্ধুদের সাথে ভিডিও বার্তা, ছবি পোস্ট দিতে বেশ উৎসাহিত হয়। যার ফলে সারাদিন ফোনেই সময় কাটাচ্ছে তারা।
স্মার্টফোনে আসক্ত শিশুরা অন্যান্য মজার ক্রিয়াকলাপ যেমন অঙ্কন, পেইন্টিং, বোর্ড গেম, গল্পের বই পড়া থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। যা তাদের স্মৃতিশক্তি, একাগ্রতা, স্ট্রেসকে বাড়িয়ে তুলছে। কিন্তু এই স্মার্টফোন কীভাবে তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে তা বাচ্চাদের বোঝানো কঠিন।
পঙ্কজ কুমার সিং, কেমব্রিজ মন্টেসরি প্রিস্কুল অ্যান্ড ডেকেয়ারের এমডি হিন্দুস্তান টাইমসে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে, “আজকের ডিজিটাল যুগে, মা-বাবার পক্ষে সন্তানদের ডিভাইস থেকে দূরে রাখা বেশ কঠিন। খেলাধুলা, সৃজনশীল সাধনা, গল্পের বই পড়া, অ্যাডভেঞ্চার এবং স্বেচ্ছাসেবীর মত কাজে শিশুদের জড়িত রাখা উচিত। এভাবে স্মার্টফোন থেকে তাদের মনোযোগ সরিয়ে নিতে হবে। শিশুদেরকে পর্দার বাইরে বিশ্ব সম্পর্কে ধারণ দিতে হবে। বাস্তব জগতের সাথে অর্থবহ সংযোগ গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। এর মাধ্যমে আমরা আমাদের বাচ্চাদের পরিপূর্ণ জীবনযাপন দিতে পারব”।
আউটডোর গেমস
আউটডোর গেমস শারীরিক ফিটনেসকে উৎসাহিত করে। ফোন থেকে দূরে রাখার ব্যবস্থা করে দেয়। সাঁতার, সাইক্লিং, মার্শাল আর্টস, ফুটবল, বাস্কেটবল বা টেনিসের মতো খেলাধূলায় সন্তানদের আগ্রহ বাড়িয়ে তুলুন। এই ক্রিয়াকলাপগুলো স্মার্টফোনের ব্যবহার কমাতে সহায়তা করে।
অ্যাডভেঞ্চারে কাযকর্মে জড়িত করুন
শিশুকে হাইকিং, ক্যাম্পিং, গার্ডেনিং এর মত কাজে জড়িত করুন। প্রকৃতি অন্বেষণে উৎসাহিত করুন। প্রকৃতির সাথে জড়িত হওয়ায় তাদের জ্ঞান বাড়বে। স্ট্রেস কমাতে পারবে। অ্যাডভেঞ্চার মূলক ক্রিয়াকলাপ তাদের সামগ্রিক সুস্থতা বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বই পড়া
পড়া প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখতে সাহায্য করে। শিশুদের হাতে বিভিন্ন ধরণের বই তুলে দিন। তাদের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ জাগিয়ে তুলুন। তাদের পড়ার অভিজ্ঞতা অন্যদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার সুযোগ করে দিন। শিশুদের লাইব্রেরিতে নিয়ে যান। বুক ক্লাবগুলোতে যোগদান করতে সাহায্য করুন।
শিল্পকলায় আগ্রহ গড়ে তুলুন
শিশুদের শখ হিসেবে লেখালেখি, বাদ্যযন্ত্র বাজানো বা চিত্রাঙ্কনের মতো সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করুন। সৃজনশীল ক্রিয়াকলাপ তাদের সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে। তাদের দক্ষতা এবং আগ্রহ বিকাশ করবে। শিশুকে আর্ট ক্লাস, সংগীত বা লেখার কর্মশালায় ভর্তি করুন।
সমাজসেবা ও স্বেচ্ছাসেবক
শিশুদের ছোটবেলা থেকেই সহানুভূতি শেখাতে হবে। তাদেরকে স্বেচ্ছাসেবী কাজে অংশ নিতে উৎসাহিত করুন। পরিবেশ পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগগুলোতে অংশ নেওয়ার জন্য সাহায্য করুন।
সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস