বৃষ্টির দিনে খিচুড়ি খেতে মন চায় কেন?
তীব্র তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমের পর স্বস্তির বৃষ্টিতে ভিজল রাজধানীবাসী। বাইরে মেঘলা আকাশ, মুষলধারে বজ্রবৃষ্টি হচ্ছে। আসলে বৃষ্টির দিনে খিচুড়ির সম্পর্ক ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই বৃষ্টি মন বলে ওঠে- খিচুড়ি খিচুড়ি। কিন্তু কথা হচ্ছে কেন এমনটা হয়? বৃষ্টি হলেই কেন খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করে?
প্রকৃতপক্ষে বৃষ্টি হলেই মনটা খিচুড়ির জন্য আঁকুপাঁকু করতে থাকে। মুখরোচক এই খাবারটিরও আবার রয়েছে নানা ধরন। কেউবা ভালোবাসে পোলাওর চাল আর মুগ ডালের ভুনা খিচুড়ি। কারো আবার পছন্দের তালিকায় আছে ঝোলসমেত পাতলা ল্যাটকা খিচুড়ি। অনেকে আবার সবজি বা মাংস মিশিয়েও খাবারটি তৈরি করেন।
খিচুড়ি ইতিহাস যা বলে
মূলত খিচুড়ি ছিল বাউলদের খাবার। পথে ঘাঁটে গান করে ঘুরে বেড়াতেন বাউলরা। সে সময় বাড়ি বাড়ি ঘুরে গান শোনাতে গেলে লোকজন তাঁদের চাল-ডাল দিত। সেগুলো একসঙ্গে মিশিয়ে বাউলেরা রান্না করে খেতেন। পরবর্তীতে যেটার নাম হলো খিচুড়ি।
বৃষ্টির সঙ্গে খিচুড়ির সম্পর্ক
এক সময় গ্রামাঞ্চলে বর্ষার সময় চারপাশ অথৈ পানিতে কানায় কানায় ভরে যেত। ঘর থেকে বের হয়ে বাজারে যাওয়া কষ্টকর ছিল। তাই ঘরে থাকা চাল আর ডাল দিয়ে গৃহিণীরা খিচুড়ি রান্না করতেন। আর বৃষ্টিতে কাঠ ভিজে গেলে রান্না করতে সময় লাগে। তাই চাল-ডাল দিয়ে সহজেই তৈরি করা যেত খিচুড়ি।
কখনো কখনো গাছে থাকা কোনো সবজি বা আলু কেটে মিশিয়ে দিতেন খিচুড়িতে। তৈরি হয়ে যেত সবজি খিচুড়ি। ঝড় বৃষ্টির মধ্যে সহজে আর কম সময়ে রান্নার জন্য খিচুড়ি ছিল উপযুক্ত পদ। বহুবছরের সেই ঐতিহ্যই এক সময় পরিণত হয় অলিখিত নিয়মে।
বৃষ্টি হলেই শৈশবের স্মৃতিচারণ মনে করেন অনেকে। মায়ের সেই রান্না করা খিচুড়ি ভেসে ওঠে মনের মধ্যে। তাই, বৃষ্টি হলেই ইচ্ছে করে খিচুড়ি খেতে। তাই খিচুড়ি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে। হজমে অনেকটা সময় নেওয়ায় এটি এই সময়ের উপযুক্ত খাবার।
সূত্র : আজতক বাংলা