দিনাজপুরে লিচু-আম বাগান ভরে গেছে মুকুলে
লিচুর রাজ্য নামে পরিচিত দিনাজপুর। দিনাজপুর জেলায় এবার লিচুর ভালো ফলন হবে বলে আশা করছেন লিচুবাগানের মালিকরা। পাশাপাশি আমেরও ফলন ভালো হবে। গত দুই বছর করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবে বলে মনে করছেন বাগানমালিক ও ব্যবসায়ীরা।
লিচু বাগানে গাছে গাছে মুকুল দেখে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে চাষিদের মন। দিনাজপুরের ১৩টি থানায় এবার সব লিচুর গাছেই ধরেছে পর্যাপ্ত পরিমাণে মুকুল।
ঋতুরাজ বসন্তে দিনাজপুরের আম ও লিচু বাগানগুলোতে সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে মুকুলগুলো। যেমন সৌন্দর্য, তেমন তার ঘ্রাণ। জেলায় এবার পাঁচ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে লিচুগাছে ব্যাপক ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি এবার পাঁচ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে আমের উৎপাদন হবে।
দিনাজপুরের সদর, চিরিরবন্দর, বিরলসহ বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বাণিজ্যিকভাবে আম ও লিচুবাগান ছাড়াও অনেকে বাসাবাড়ি চাষ করেছেন। তাদের রোপণ করা বেশিরভাগ বাগানেই ফুটেছে মুকুল। এ যেন হলুদ আর সবুজের মিলনমেলা।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, দিনাজপুরের আম ও লিচু গাছগুলোয় গত বছরের তুলনায় এবার আশানুরূপ মুকুল ধরেছে। এসব মুকুল থেকে বেশি পরিমাণ ফলন পাওয়ার আশায় ইতোমধ্যে গাছগুলোতে ওষুধ প্রয়োগসহ নানামুখী পরিচর্যা গ্রহণ করছেন চাষিরা। তবে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে এবার বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা।
দিনাজপুর শহরের কসবা এলাকার আমবাগান মালিক সিদ্দিকুর জানান, বেশিরভাগ গাছে আগাম মুকুল ধরায় বাম্পার ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবার। চিরিরবন্দর উপজেলার নশরতপুর গ্রামের সোবহান, নারায়ণ শর্মা বলেন, এমন কোনো বাড়ি নেই যে, যাদের বাড়িতে আমগাছ নেই। তাই প্রতিটি বাড়িতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছে আমের মুকুল। এসব মুকুলে সুবাস যেন মুগ্ধ করে তুলেছে মানুষকে।
এ ছাড়া লিচু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লিচু গাছগুলোয় গতবারের চেয়ে এবার মুকুল ধরেছে বেশ ভালো। এখন শুধু প্রয়োজন নিয়মিত পরিচর্যা আর কৃষি অফিসের সহযোগিতা। তাহলে গাছের মুকুল ধরে রাখতে পারলে ফলন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন চাষিরা।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, এবার একটু আগেই লিচু ও আমগাছে মুকুল এসেছে। দিনাজপুর জেলায় পাঁচ হাজার ৪৮০ হেক্টর জমিতে লিচুর গাছ রয়েছে। এবার পাঁচ হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে আমের গাছে মুকুল এসেছে। গতবারের চেয়ে এক হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে লিচু আবাদ এবার বেড়েছে। তবে আবহাওয়া বিরূপ না হলে যে হারে গাছে মুকুল ধরেছে, তাতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সারা দেশ থেকে অনেকেই টসটসে রসালো লিচুর স্বাদ নিতে দিনাজপুরে আসেন। চাল-চিড়ার পর এখানকার লিচুর রয়েছে দেশব্যাপী খ্যাতি। ইতোমধ্যে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা গাছের নিয়মিত চর্চা করছেন। তারা আশা করছেন, এবার আম-লিচুর বাম্পার ফলন হবে।