গতকাল শুক্রবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বাংলা একাডেমির ফেলো কবি কামাল চৌধুরীর বাংলা একাডেমি প্রকাশিত দুটি কাব্যগ্রন্থ এবং আরো দুটি মূল্যায়নগ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব ও পাঠ উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আলোচনায় অংশ নেন কবি রুবী রহমান, কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দীন ইউসুফ, কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ও কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলন।

শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন নজরুল গবেষক ড. রফিকুল ইসলাম, জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী, কবি নাসির আহমেদ, কবি আসলাম সানী, কবি মোহাম্মদ সাদিক, কবি আসাদ মান্নান, প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম,  কবি বুলবুল মহলানবিশ, ছড়াকার আলম তালুকদার, আলমগীর হোসেন, কাবেদুল ইসলাম, কবি শামীম রেজা, কবি শামীমুল হক শামীম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।

কবি কামাল চৌধুরীর লেখা গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। আবৃত্তিশিল্পী শাহাদাৎ হোসেন নিপু কবির লেখা ‘মার্চ’ কবিতাটি পাঠ করেন। অনুষ্ঠানের অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘কামাল চৌধুরী কবিতায় দেশ ও মানুষের কথা বলেছেন। তাঁর নতুন কবিতার বইয়ে আমরা আবারও দেশপ্রেম ও মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতার প্রকাশ দেখতে পাচ্ছি।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে কবিতা চর্চার অনন্যতার পাশাপাশি দেশের প্রগতিশীল উত্থানের পথে কামাল চৌধুরী দীপ্ত ভূমিকা পালন করেছেন।’

আলোচকরা বলেন, কবি কামাল চৌধুরী কবিতায় দেশ, মানুষ ও মৃত্তিকার কথা বলেছেন সহজ ভাষায় ও বিন্যাসে। মহান মুক্তিযুদ্ধ যেমন তাঁর কবিতা ও শিল্পসত্তার অন্যতম প্রেরণা, তেমনি স্বাধীন স্বদেশে গণতন্ত্র ও প্রগতি প্রতিষ্ঠার পথে তিনি হেঁটেছেন অবিরাম। বিরুদ্ধ সময়ে কালস্রোতে দাঁড়িয়ে কবিতার অক্ষর ও অবয়বে সন্ধান করেছেন অনির্বাণ আলো। আলোচকরা বলেন, ব্যক্তি হিসেবে তাঁর উদার আধুনিক ও সহিষ্ণু মনোভঙ্গি এবং অসাম্প্রদায়িক জীবনদৃষ্টির প্রতি অবিচল পক্ষপাত তাঁকে সমকালের প্রিয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। তাঁর সদ্য প্রকাশিত কবিতার বই এবং কবিতার মূল্যায়নগ্রন্থ সৃষ্টির সূত্রে কবিকে আবিষ্কারের পথ প্রশস্ত করবে।

সভাপতির বক্তব্যে শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘কামাল চৌধুরীর কবিতা-নির্মাণকলায় বোধ ও ভাষা নির্মিতির যে নতুনত্ব আমরা লক্ষ করি, তা প্রমাণ করে কবিতায় তিনি নিরন্তর নিরীক্ষাপ্রবণ। তাঁর নতুন প্রকাশিত কবিতার বই এবং কবিতার মূল্যায়নগ্রন্থ কবিতাপ্রেমী ও বোদ্ধাদের কাছে নিঃসন্দেহে আদৃত হবে।’

অনুষ্ঠানে আরো ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন কবিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হাসান মাহমুদ।