বিখ্যাত সাহিত্যিক ইনতিজার হুসাইন আর নেই
বয়স পেরিয়েছিল নব্বইয়ের কোটা। বেশ কিছুদিন ধরেই চিকিৎসা চলছিল লাহোরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। শেষ পর্যন্ত আর পারলেন না উর্দু ভাষার জনপ্রিয় ছোটগল্প, কবিতা আর উপন্যাস রচয়িতা ইনতিজার হুসাইন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২। দি এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের খবরে জানা গেল, বার্ধক্যজনিত কারণেই মূলত মৃত্যু হয়েছে এই প্রবীণ সাহিত্যিকের।
ইনতিজার জন্মসূত্রে পাকিস্তানি নন, দাঙ্গার সময়ে অনেকের মতোই ভারত ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল তাঁকে। ধীরে ধীরে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন উর্দু ভাষার সেরা এক সাহিত্যিক হিসেবে। এ ছাড়া পত্রিকায় নিয়মিত কলাম লিখেছেন, তবে ইংরেজিতে। দেশ বিভাগের কষ্ট প্রায়ই ফুটে উঠেছে তাঁর লেখায়।
তিনি হলেন প্রথম পাকিস্তানি এবং উর্দু ভাষার লেখক, যিনি কোনো আন্তর্জাতিক পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৩ সালের ম্যান বুকার পুরস্কারের জন্য মনোনীত চূড়ান্ত ১০ জনের মধ্যে একজন ছিলেন তিনি। এই পুরস্কার শেষ পর্যন্ত না পেলেও বহু পুরস্কার পেয়েছেন বিভিন্ন সময়ে। ২০১২ সালে লাহোর সাহিত্য উৎসবে তাঁকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
তাঁর কিছু কাজ উর্দু থেকে ইংরেজিতে ভাষান্তরিত হয়েছে। তিনি নিজেও নিয়মিত অনুবাদের কাজ করেছেন। তাঁর মৌলিক গ্রন্থের মধ্যে ‘বস্তি’, ‘হিন্দুস্তান সে আখ্রি খত’, ‘আগে সমন্দর হ্যায়’, ‘শেহ্র-ই-আফসোস’, ‘জতাকা টেলস’, ‘জনম কাহানিয়াঁ’, ‘ও যো খো গ্যয়ে’ বিখ্যাত।
১৯২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর ভারতের বুলন্দ শহরে জন্ম তাঁর। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় ভারত ছেড়ে পাকিস্তানে চলে আসেন তিনি।
ইনতিজার হুসাইন সেসব উর্দু সাহিত্যিকের একজন, যিনি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশে যে নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল, নিজের লেখার মাধ্যমে সেটার প্রতিবাদ করেছিলেন। ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত তাঁর ‘শেহ্র-ই-আফসোস’ কিংবা ‘ও যো খো গ্যয়ে’ নামের গল্পে বর্ণিত হয়েছে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে সংঘটিত নৃশংস ঘটনার কথা। একই আঙ্গিকে তিনি পরবর্তীকালে ‘আসির’ ও ‘নিন্দ’ নামে আরো দুটি গল্প লেখেন।