রমজানের প্রথম দিনেই জমে উঠেছে পুরান ঢাকার ইফতার বাজার
বছর ঘুরে আবারও এলো পবিত্র মাহে রমজান। রমজানের প্রথম দিনেই প্রতি বছরের মতো এবারও দেখা গেল পুরান ঢাকার রাস্তায় চিরচেনা দৃশ্য। এমাথা থেকে ওমাথা, ভরে উঠেছে হরেক রকমের ইফতারির আইটেমে। চৈত্রের বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে তার ঘ্রাণ।
ইতিহাস বলে, ঢাকার এই এলাকার ইফতারির এমন ঐতিহ্য চার শতাব্দীর। আদিকালে এখানে ইফতার করাকে বলা হতো ‘রোজা খোলাই’। রোজা খোলাই শব্দটি অনেক পাঠকের কাছে নতুন মনে হলেও রমজান মাসে পুরান ঢাকার আদি বাসিন্দারা এই শব্দটির ব্যবহারে এখনও অভ্যস্ত।
ইফতারি বানানোর রেওয়াজ পুরান ঢাকা এলাকার প্রতি ঘরে ঘরে। তারপরও বাইরের খাবারে আকর্ষণ যেন ছাড়ে না। সে কারণেই বাইরের ইফতারির টান সেই আদিকাল থেকেই চলে আসছে। রমজান মাসজুড়ে তাই এই আদি জনপদে ইফতারির যেন মেলা বসে।
পুরান ঢাকার চকবাজার, নাজিরাবাজার, রায়সাহেব বাজার, নারিন্দাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আজ শুক্রবার রোজার প্রথম দিনেই দেখা গেছে ইফতার ব্যবসায়ীদের হাঁকডাক।
ইফতারি ব্যবসায়ী আলামিন মণ্ডল বলেন, ‘এ বছর দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য ইফতার তৈরির সামগ্রী কিনতে একটু কষ্ট হচ্ছে। তবুও আশা করছি বারবারের মতো এবারও জমজমাট ইফতারি উপহার দিতে পারব। কিছু ইফতারির দাম বেড়েছে, আর কিছুর দাম ঠিক রেখে আকারে ছোট করা হয়েছে।’
এখানকার ইফতারের ভেতর রয়েছে নানা ভিন্নতা। ভিন্নরকম এসব ইফতারের ভেতর রয়েছে আস্ত মুরগির কাবাব, মোরগ মুসাল্লম, বটি কাবাব, টিকা কাবাব, কোতা, চিকেন কাঠি, শামি কাবাব, শিকের ভারী কাবাব, সুতি কাবাব, কোয়েল পাখির রোস্ট, কবুতরের রোস্ট, জিলাপি, শাহি জিলাপি, নিমকপারা, সমুচা, আলাউদ্দিনের হালুয়া, হালিম, দইবড়া, কাশ্মীরি শরবত, ৩৬ উপকরণের মজাদার খাবার ‘বড়বাপের পোলারা’ ইত্যাদি।
এসব বাহারি ইফতারির ভেতর বেশি জমজমাট আয়োজন হয় চকবাজারে। ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ চকবাজারে আসেন ইফতারি কিনতে। উপভোগ করেন নানা ইফতারির স্বাদ।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পুরান ঢাকার বাসিন্দা আরিফ হোসেন ইমন বলেন, ‘প্রতি বছরই চকবাজারের ইফতারির স্বাদ নিতে আসি। এবার রামজানের প্রথম দিন চলে আসছি। করোনার জন্য আগে কয়েক বছর ইফতারি আয়োজন তেমন জমজমাট না হলেও এবার পুরোনো রুপ ফিরে এসেছে।