ধর্ষণ মামলায় খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি কারাগারে
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুকৃবি) সাবেক উপাচার্য (ভিসি) ড. মো. শহীদুর রহমান খানকে ধর্ষণ মামলায় জামিন না দিয়ে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নারী কর্মকর্তার ধর্ষণ মামলায় গতকাল সোমবার (৮ মে) দুপুরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন শহীদুর রহমান। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. আব্দুস সালাম জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বিষয়টি আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট ফরিদ আহমেদ নিশ্চিত করেছেন।
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপচার্য মো. শহীদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলাটি করেছেন তাঁর সাবেক ব্যক্তিগত নারী সহকারী। গত ১৩ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন ওই নারী। এই মামলায় অপর আসামি খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন।
ভুক্তভোগী নারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট সুলতানা রহমান শিল্পী বলেন, ‘মামলার বাদী খুকৃবির কন্ট্রোলার স্টোর কিপার হিসেবে ২০২১ সালে কর্মরত ছিলেন। ওই সময় ভিসি শহীদুর রহমান কন্ট্রোলার বোর্ডের প্রধান এবং অপর আসামি খন্দকার মাজহারুল ইসলাম ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ওই নারীকে ভিসির জন্য খাবারের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব দেন। তিনি বিভিন্ন সময় খাবার পৌঁছে দিতে গেলে ভিসি কুপ্রস্তাব দেন। ভিকটিম বিষয়টি রেজিস্ট্রার মাজহারুল ইসলামকে জানান। একপর্যায়ে ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মাজহারুল ইসলামের সহযোগিতায় ভিসি শহীদুর রহমান তাকে ধর্ষণ করেন। পরে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভিকটিমকে তার স্বামীকে তালাক দিতে বলেন। বিষয়টি ১০০ টাকা স্ট্যাম্পে লিখিত হওয়ার পর ভিকটিম তার স্বামীকে তালাক দেন। পরে বিয়ে না করেও বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি এবং স্বামী-স্ত্রীর মতো বসবাস করেন ভিসি শহীদুর রহমান ও ভুক্তভোগী নারী। এরপর তাকে পদোন্নতি দিয়ে উপচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী করা হয়।’
ভিকটিমের আইনজীবী আরও বলেন, ‘২০২২ সালে ৩০ নভেম্বর থেকে ভিসি শহীদুর রহমান ভুক্তভোগী নারীর সঙ্গে সব যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।’
ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মো. শহীদুর রহমান খান ২০১৮ সালে ১১ সেপ্টেম্বর খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। পরে তাকে পরিবারের ৯ সদস্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবৈধভাবে নিয়োগ করার দায়ে অব্যাহতি দেওয়া হয়।