হামলার ২৪ দিন পর আ.লীগনেতাসহ চারজনের নামে বিএনপির মামলা
পাবনায় বিএনপির নেতাদের ওপর হামলার ২৪ দিন পর আওয়ামী লীগনেতাসহ চারজনের নামে আদালতে মামলা হয়েছে। কেন্দ্র ঘোষিত বিএনপির অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে ফেরার পথে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়। এরপর গতকাল রোববার (২ জুলাই) পাবনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি-১ আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে পাবনা জেলা পরিষদের সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নজরুল ইসলাম সোহেলকে। নাম উল্লেখ করা অপর আসামিরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রফিকুল ইসলাম রুমন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মীর রাব্বিউল ইসলাম সীমান্ত এবং পাবনা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিফাত রহমান। এ ছাড়া ২৫ থেকে ৩০জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার বাদী পাবনা জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তসলিম হাসান খান সুইট এনটিভি অনলাইনকে জানান, ঘটনার পরপরই আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম, কিন্তু থানা আমাদের এজাহার নেয়নি। পরে আমরা আদালতে মামলার আবেদন করেছিলাম। গতকাল রোববার আদালত সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছে।
এ বিষয়ে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আদালতে মামলা হয়েছি কি না, এখনও জানি না। আমাদের কাছে মামলার কপি আসেনি। এলে জানানো হবে। এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কিছু জানি না।’
গত ৮ জুন পাবনা জেলা বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। তাদের দাবি, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে পাবনা শহরের গোপালপুরের কার্যালয় থেকে জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শহরের পাওয়ার হাউজ পাড়ার বিদ্যুৎ অফিসে অবস্থান নিতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে বড় ব্রিজের পাশে ঘোড়া স্ট্যান্ডে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে ফেরার পথে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের হামলার মুখে পড়ে। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইয়ামিন খানসহ বেশ কিছু নেতাকর্মীরা আহত হন। বিএনপির নেতাকর্মীরা পাশের লতিফ টাওয়ার মার্কেটে আত্মরক্ষা করলে সেখানেও ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এসময় শহরজুড়ে ব্যাপক উত্তেজনা দেখা দেয়। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়।
এই ঘটনায় করা মামলার প্রধান অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক লীগনেতা জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম সোহেল এনটিভি অনলাইনকে জানান, যে অভিযোগে মামলা হয়েছে, তার সবই মিথ্যে।
মামলাটিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজাউল রহিম লাল। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘প্রথমত মামলাটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমি মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি করছি। এটা একটা ছোট দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। এটা নিয়ে বিএনপির নেতাদের এতোটা বাড়াবাড়ি করা ঠিক হয়নি। সারা দেশের তুলনায় পাবনা অনেক শান্তিপ্রিয়। তারা (বিএনপি) এ পর্যন্ত কোনো বাধা-বিপত্তি ছাড়াই পাবনায় মিছিল-মিটিং করেছে। কোনোদিন তাদের ওপর আমরা হামলা-বাধা কিছুই করিনি। সেদিন ছোট একটা ভুলবোঝাবুঝি হয়ে গেছে। আমি বা প্রিন্স (জেলা আওয়ালী লীগের সাধারণ সম্পাদক) থাকলে এসব কিছু ঘটত না।’