নীলফামারীতে তাপমাত্রা নামল ৯ ডিগ্রিতে, দুর্দশায় সাধারণ মানুষ
গত কয়েকদিন ধরে চলমান তীব্র শীত, ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় জবুথবু অবস্থা নীলফামারীর মানুষের। শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন অনেকে। শিশু ও বয়স্করা ডায়েরিয়া-নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ঘন কুয়াশায় দেখা মেলে না সূর্যের, দিনেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহন। খরকুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন বিভিন্ন বয়সের মানুষ। গত এক সপ্তাহ ধরে জেলার সৈয়দপুর বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠা-নামা ব্যাহত হচ্ছে।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, আজ শনিবার (১৩ জানুয়ারি) সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সৈয়দপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লোকমান হোসেন বলেন, ‘কুয়াশা ও বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশি থাকায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। রানওয়েতে ফ্লাইট ওঠা-নামার জন্য দৃষ্টিসীমা অন্তত দুই হাজার মিটার প্রয়োজন হয়। সকাল হতে দুপুর পর্যন্ত দৃষ্টিসীমা পর্যাপ্ত না হওয়ায় উড়োজাহাজ ওঠা-নামা ব্যহত হচ্ছে।’
সৈয়দপুর বিমানবন্দরের ম্যানেজার সুপ্লব ঘোষ বলেন, ‘গত মঙ্গলবার থেকে ঘন কুয়াশায় দৃষ্টিসীমা কম থাকার কারণে সকালের দিকে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠা-নামা ব্যাহত হচ্ছে। এই কয়েকদিন সকাল থেকে দুপুর ১২টার পর্যন্ত সূচিতে থাকা ঢাকা থেকে আসা সৈয়দপুরগামী ফ্লাইটগুলোর চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। তবে সকালের এসব ফ্লাইট বাতিল করা হয়নি। দুপুরের পর কুয়াশা কেটে গেলে ফ্লাইট চলাচল স্বাভাবিক হবে আশা করি।’
এদিকে, তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় প্রচণ্ড কষ্টে আছেন গরিব মানুষ। রেললাইনের পাশে পুরাতন কাপড়ের লন্ডা মার্কেটে ছুটছেন তারা একটু কম দামে শীতবস্ত্রের আশায়। ডোমার বাজারের রেললাইনের কাছে পুরাতন কাপড়ের লন্ডা মার্কেটে ভিড় দেখা গেছে।
সবুজ পাড়া এলাকার আইয়ুব আলী বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। গরম কাপড় নেই। শীতে খুব কষ্টে আছি। তাই কম দামে এখানে পুরাতন গরম কাপড় কিনতে এসেছি। কিন্তু এখানেও দাম বেশি। কেউ কোনো কম্বল সহায়তা দেয়নি এখনও।’
পুরাতন কাপড় ব্যবসায়ী সাগর ইসলাম বলেন, ‘গত বছরের চেয়ে এবার কাপড় আমরা বেশি দামে কিনেছি। তাই এবার একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।’
খরকুটো জ্বালিয়ে আগুনের তাপ পোহাতে থাকা কলেজছাত্র লিখন ইসলাম বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড শীত। তাই আমরা খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাচ্ছি। একবার শরীর গরম হয়ে গেলে অনেক ভালো লাগে।’
নীলফামারীর জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোঘ বলেন, ‘এ পর্যন্ত জেলায় ৪০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। শীতার্তদের জন্য নতুন করে আরও চাহিদা পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এবং অনেকে ব্যক্তিগতভাবে কম্বল বিতরণ করছেন।’