দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ শেষে চলছে গণনা। আজ মঙ্গলবার (২১ মে) সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকেল ৪টায় শেষ হয়। এ ধাপে ২৪ উপজেলায় ইলেট্রিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকি উপজেলাগুলোতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। বিক্ষিপ্ত কয়েকটি ঘটনা ছাড়া আজকের ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ ধাপেও বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো অংশগ্রহণ করেনি। জনগণকে ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে বিভিন্ন উপজেলায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেছে দলটি। এ ছাড়া নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে আওয়ামী লীগ এবার দলীয় প্রতীকে প্রার্থী দেয়নি। ফলে ক্ষমতাসীন দলটিরই একাধিক প্রার্থী নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন। তবে দ্বিতীয় ধাপেও ভোটার উপস্থিতি আশানুরূপ হয়নি।
ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে।
দ্বিতীয় ধাপে ১০টি অঞ্চলের ১০৬ পৌরসভা ও এক হাজার ৪৯৪ ইউনিয়নে মোট ভোটকেন্দ্র ছিল ১৩ হাজার ১৬টি আর ভোটকক্ষ ছিল ৯১ হাজার ৫৮৯টি। গতকাল সোমবার ৬৯৭ কেন্দ্রে ব্যালট পাঠানো হয়েছে। আজ ভোরে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে ১২ হাজার ৩২৩ কেন্দ্রে। মোট ভোটার রয়েছে তিন কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার ৭৪৮ জন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োগ
আজকের নির্বাচনে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোট বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন রয়েছে ৪৫৮ প্লাটুন। ভোটকেন্দ্রে মোট পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৮২৯ জন, মোবাইল টিমে মোট পুলিশ ১৩ হাজার ৪৯০ জন, স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোট পুলিশ সদস্য পাঁচ হাজার ৫৬৭ জন মোতায়েন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে মোট পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে ৮৯ হাজার ৮৬৩ জন। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোট র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয় (র্যাব) মোতায়েন রয়েছে দুই হাজার ৭৬৮ জন। ভোটকেন্দ্র এবং মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে মোট আনসার সদস্য মোতায়েন রয়েছে এক লাখ ৯৩ হাজার ২৮৭ জন। নির্বাচনে স্বাভাবিক এলাকার ভোটকেন্দ্রে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ, চৌকিদার, দফাদারসহ মোট ১৭ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। আর গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮-১৯ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। বিশেষ এলাকার (পার্বত্য ও দুর্গম এলাকা) সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০-২১ জন সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।
যন্ত্রচালিত যানবাহন ও নৌযানের চলাচল নিষেধ
ভোটগ্রহণ উপলক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় গত রোববার দিনগত রাত ১২টা থেকে আজ মঙ্গলবার (২১ মে) রাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত বোট (নির্দিষ্ট রুটে চলাচলকারী ব্যতীত) অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইসি। তা ছাড়া সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় ভোটগ্রহণের দুদিন আগে থেকে ভোটগ্রহণের পরদিন মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে ২২জন একক প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ৭জন চেয়ারম্যান, ৮ জন ভাইস চেয়ারম্যান ও ৭ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রয়েছেন।
এদিকে ভোটার উপস্থিতির বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর সোমবার বলেন, ধান কাটার মৌসুম, বৈরী আবহাওয়া, বড় রাজনৈতিক দল নির্বাচনে না আসা এবং কর্মস্থল থেকে ভোট দিতে না যাওয়ার কারণে ভোটার উপস্থিতি কম হতে পারে। তবে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা নেই। ভোট দিলেও তা গণনা করা হবে কি না ভোটারদের মনে এমন সন্দেহ রয়েছে। এ ছাড়া বিএনপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন বর্জন করেছে। তারা সাধারণ মানুষকে এই ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছে। এই নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনাও নেই। বরং ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে না।