পুলিশ সদস্যকে লাঞ্ছনা, ছাত্রলীগের ৩ নেতাকে পিটুনি
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পর্শকাতর স্থানে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত পুলিশের এক সদস্যকে লাঞ্ছিত করেছেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পুলিশ সদস্যরা তাঁদের এলোপাতাড়ি পিটুনি দেন। পরে পুলিশের এক কর্মকর্তা এসে ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন।
আজ শনিবার দুপুরে ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় (কেপিএ) পুলিশ ক্যাম্পে এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে পুলিশের পিটুনিতে আহত হয়েছেন পলাশ শিল্পাঞ্চল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন মিয়া, ঘোড়াশাল পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহম্মেদ।
পুলিশ ও স্থানীয় ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ব্যক্তিগত আক্রোশের জের ধরে ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রলীগের কর্মী রবিন, কাউসার ও সাগর ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের চাকরিজীবী আলম খন্দকারের ছেলে সাহেদ ও তাঁর বন্ধু আশরাফুলকে মারপিট করেন। এ ঘটনায় তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ছাত্রলীগ কর্মীদের আটক করেন। ছাত্রলীগের কর্মীরা বিষয়টি স্থানীয় নেতাদের জানান। পলাশ শিল্পাঞ্চল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন মিয়া, ঘোড়াশাল পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক রাসেল আহম্মেদ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ ওই স্থানে ঢুকতে বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হন ছাত্রলীগের নেতারা। একপর্যায়ে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন পুলিশ সদস্যরা। এ সময় কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন উত্তেজিত হয়ে পুলিশ সদস্যদের গালিগালাজ শুরু করেন। পরে মামুন কর্তব্যরত এক পুলিশ সদস্যকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। পুলিশ সদস্যরা তাঁদের তিনজনকে আটক করে এলোপাতাড়ি পিটুনি দেন। এরপর স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতাদের তোপের মুখে ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুছলেউদ্দিন ক্ষমা চেয়ে বিষয়টি মীমাংসা করেন।
আহত কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মামুন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আটকের ঘটনা জানতে চাওয়ায় পুলিশ আমাদের ওপর চটে যায়। পরে তাঁরা আমাদের মারধর করেন।’
এদিকে দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য উজ্জ্বল বলেন, ‘ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। এর নিরাপত্তায় সরকার তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে আমাদের ক্যাম্পটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পরিচয় না দিয়ে বিনা অনুমতিতে জোর করে স্যারের কক্ষে প্রবেশ করতে গেলে আমি বাধা দিই। এ সময় তাঁরা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন এবং গালিগালাজ শুরু করেন।’
পুলিশ সদস্যদের গালমন্দ ও মারপিটের ঘটনায় সাংবাদিকদের কাছে মুখ খুলতে রাজি হননি পুলিশ কর্মকর্তা মুছলেউদ্দিন। তবে তিনি বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। সেটা মীমাংসা হয়ে গেছে।