শিল্পকর্মে উঠে এলো বুড়িগঙ্গা পাড়ের জীবন
বুড়িগঙ্গা নদীর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উদযাপন করতে তিন দিনব্যাপী ‘গঙ্গাবুড়ি’শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। এই আয়োজনে একটি দ্বিতল যান্ত্রিক নৌকায় বিভিন্ন ধারার শিল্পীদের বিস্তৃত ও এলাকাভিত্তিক শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হয়। শিল্প, প্রকৃতি ও কমিউনিটির সম্মিলনে সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা নিশ্চিতেই এই আয়োজন।
সোয়ারিঘাট, জিঞ্জিরা ফেরিঘাট, খোলামোড়া নৌকাঘাট, ঠোটা ঘাট ও মাদবর বাজার ঘাটের মতো বুড়িগঙ্গা নদীর বিভিন্ন কূলজুড়ে তিন দিনব্যাপী (১৫-১৭ নভেম্বর) ‘গঙ্গাবুড়ি’শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শেষ হয়েছে।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের অর্থায়নে প্রদর্শনীটির আয়োজন করে বৃহত্ত্ব আর্ট ফাউন্ডেশন। এই প্রকল্পের প্রথম পর্বটির অর্থায়ন করেছে ইউনিক বাংলাদেশ ক্লাস্টারের আন্তর্জাতিক সদস্য সংস্থা ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশ, আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দ্য ঢাকা, গ্যোটে ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস দূতাবাস ও স্পেন দূতাবাস।
সোয়ারিঘাটে একটি দ্বিতল যান্ত্রিক নৌকায় ফারাহ নাজ মুন, জয়দেব রোয়াজা ও ইয়াসমিন জাহান নূপুরের পারফরম্যান্সের মধ্য দিয়ে প্রদর্শনীটি শুরু হয়। এতে ভাস্কর বিলাস মণ্ডল, মুজাহিদ মুসা, রূপকল্প চৌধুরী, চিত্রশিল্পী দিনার সুলতানা পুতুল, মঈনুদ্দিন মনি, ফ্রেঞ্চ ফটোগ্রাফার এলোদি গুইগনার্দর মতো নির্বাচিত শিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হয়। পাশাপাশি, আয়োজনে জনপ্রিয় রিকশা পেইন্টার মোহাম্মদ হানিফ পাপ্পু ও সৈয়দ আহমেদ হোসেনের মতো নগর লোকজ শিল্পীদের সৃজনশীল কাজও প্রদর্শন করা হয়। প্রদর্শনীটি কিউরেট করেন শেহজাদ শাহরিয়ার চৌধুরী ও পরিচালনা করেন বিশ্বজিৎ গোস্বামী। কফিল আহমেদের জনপ্রিয় গান ‘গঙ্গাবুড়ি’থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রদর্শনীটির এই নামকরণ করা হয়।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, “নদী, মানুষ, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও শিল্পের এই অর্থবহ সম্মেলনের অংশ হতে পেরে ব্রিটিশ কাউন্সিল আনন্দিত। সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে বুড়িগঙ্গা এবং এ কেন্দ্রিক জীবন নির্বাহ ও ঐতিহ্যের সাথে আরও বেশি সংযুক্ত করার লক্ষ্য থেকেই এই নৌকা প্রদর্শনীর আয়োজন। শিল্পের সৃষ্টিশীল এবং পরিবর্তনশীল ক্ষমতাকে কেন্দ্রে রেখে, আমরা চাই যেন আমাদের এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে আরও অনেক সংলাপের সূচনা হয়, যা নদীকেন্দ্রিক হেরিটেজ এবং তার ভবিষ্যত নিয়ে আমাদের সবাইকে ভাবাবে।”
আয়োজনে প্রত্যেক শিল্পী তাদের নিজস্ব ঢংয়ে নদী ও এর মানুষের সুগভীর বন্ধন হিসেবে বুড়িগঙ্গার অনন্য ভূমিকা তুলে ধরেন। নদীকে ঘিরে গড়ে ওঠা জীবন ও তার চারপাশের ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলে এসব শিল্পকর্ম; নদী সংরক্ষণের দায়িত্ব ও ঐক্যের ক্ষেত্রে সম্মিলিত ধারণার ওপর গুরুত্বারোপ করে। এই আয়োজন প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের সুরক্ষা ও সংরক্ষণে দর্শকদের সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে উৎসাহী করে তোলে।