টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা হ্রাস
২০২৪ সালে টানা তৃতীয় বছরের মতো চীনের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির পর এই পতন অব্যাহত রয়েছে। দেশটি দ্রুত বয়স্ক জনগোষ্ঠী ও ক্রমাগত নিম্ন জন্মহার নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। খবর এএফপির। গতকাল শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) চীনা সরকার এসব তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, একসময় বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে পরিচিত চীন ২০২৩ সালে ভারতের পেছন পড়ে যায়। জন্মহার বাড়াতে বেইজিং ভর্তুকি এবং প্রজনন সহায়ক প্রচারণা চালাচ্ছে। ২০২৪ সালের শেষে চীনের জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪০ কোটি ৮০ লাখ। যা এক বছর আগেও ছিল ১৪১ কোটি। তবে জনসংখ্যা হ্রাসের গতি গত বছরের তুলনায় এ বছর কিছুটা কম। ২০২৩ সালে জনসংখ্যা হ্রাসের হার ২০২২ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি ছিল।
১৯৮০-এর দশকে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ‘এক সন্তান নীতি’ চালু করেছিল। তবে ২০১৬ সালে তা বাতিল করে। ২০২১ সালে এসে দম্পতিদের তিন সন্তান নেওয়ার অনুমতি দেয়। তবে এই নীতি এখনও জনসংখ্যা হ্রাস ঠেকাতে পারেনি। উচ্চ জীবনযাত্রার ব্যয়, নারীদের কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ এবং উচ্চশিক্ষার প্রতি আগ্রহ জন্মহার হ্রাসের জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনসংখ্যা হ্রাসের এ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। অর্থনৈতিক মন্দা এবং নারীদের শ্রমবাজারে লিঙ্গ বৈষম্যের কারণে এই প্রবণতা চলবে। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে বিবাহের সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারির সময় সন্তানধারণ স্থগিত করা নারীদের কারণে জন্মহার সামান্য বেড়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে, জনসংখ্যা হ্রাসের প্রবণতা অপরিবর্তিত থাকবে।
সরকার সেপ্টেম্বরে জানায়, তারা ধীরে ধীরে অবসর গ্রহণের বয়স বাড়াবে। আগে এই বয়স ৬০ বছর ছিল, যা বিশ্বে অন্যতম সর্বনিম্ন। এই নতুন নিয়ম ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে। দ্রুত বয়স্ক জনসংখ্যা এবং জন্মহারের সংকট চীনের অর্থনীতি, পেনশন ও জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর চাপ বাড়াচ্ছে।