এবার পাবনায় সেবককে কুপিয়ে হত্যা
নাটোরে খ্রিস্টান দোকানি ও ঝিনাইদহে হিন্দু পুরোহিতকে কুপিয়ে হত্যার রেশ না কাটতেই এবার পাবনায় সৎসঙ্গ আশ্রমের এক সেবককে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটল।
আজ শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে পাবনা সদর উপজেলার হেমায়েতপুরের মানসিক হাসপাতালের গেটের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে (৬২)। তাঁর বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের আরুয়া কংশু এলাকায়। তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে হেমায়েতপুরের শ্রীশ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র সৎসঙ্গ সেবাশ্রমে সেবক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ- খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ। জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি চন্দন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক বিনয় জ্যোতি কুণ্ডু এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি গণেশ ঘোষ অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার দাবি করেছেন।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল হাসান জানান, ডায়াবেটিসের রোগী নিত্যরঞ্জন প্রতিদিন ভোরে হাঁটতেন। আজ ভোরেও হাঁটছিলেন। পাবনা মানসিক হাসপাতালের উত্তরগেটে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা পেছন থেকে নিত্যরঞ্জন পাণ্ডেকে ঘাড়ে-মাথায় এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করে।
তবে কারা ও কী কারণে নিত্যরঞ্জনকে হত্যা করেছে, তা নিশ্চিত করতে পারেননি পুলিশের এ কর্মকর্তা। তিনি জানান, হত্যার কারণ ও হত্যাকারী সম্পর্কে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ পাবনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর কবিরসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পাবনার এসপি আলমগীর কবির বলেন, নিত্যরঞ্জন পাণ্ডে যে এলাকায় খুন হয়েছেন, সেটি একটি নির্জন স্থান। কর্মচাঞ্চল্য শুরু হলে এই এলাকাটিতে লোক সমাগম হয়। এর বাইরে এখানে তেমন লোকজন থাকে না। সেই এলাকায় পাঁচটা থেকে সোয়া পাঁচটার দিকে হত্যার ঘটনাটি ঘটেছে।
এসপি আরো বলেন, একটি কোপেই নিত্যানন্দের মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তবে হত্যাকাণ্ডটি কারা ঘটিয়েছে, তা তদন্তসাপেক্ষ বিষয়।
এক সপ্তাহে দুর্বৃত্তদের কোপে ও গুলিতে চারজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে গত ৫ জুন (রোববার) চট্টগ্রামে দুর্বৃত্তদের গুলিতে ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু (৩৫) নিহত হন। একই দিন নাটোরে দুর্বৃত্তদের কোপে খ্রিস্টান দোকানি সুনীল গোমেজ (৬৫) নিহত হন। এর দুই দিন পর ৭ জুন ঝিনাইদহে আনন্দ গোপাল গাঙ্গুলীকে (৬৫) কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। আজ পাবনায় সেবাশ্রমের সেবক নিত্যরঞ্জন পাণ্ডেকে (৬২) হত্যা করা হলো।