পাবনার বরেণ্য সাংবাদিক মীর্জা শামসুলের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
পাবনায় সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধুনালুপ্ত দৈনিক বাংলার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার ও বিটিভি প্রতিনিধি মীর্জা শামসুল ইসলামের ১৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৩ অক্টোবর, সোমবার। এ উপলক্ষে মরহুমের পরিবারের সদস্যরা তাঁর কবর জিয়ারত করেন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় পাবনা প্রেসক্লাবের ভিআইপি মিলনায়তনে স্মরণসভার আয়োজন করা করেছে।
মরহুম মীর্জা শামসুল ইসলাম ছাত্রজীবনে ১৯৫৮ সালে তিন ভাষায় প্রকাশিত মাসিক আমাদের দেশ পত্রিকায় সাহিত্য সম্পাদক হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। ১৯৬২ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর প্রথমে শিক্ষকতা দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করেন। পরে সাংবাদিকতাকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৬৪ সালে তৎকালীন দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে দৈনিক বাংলার অবলুপ্তি পর্যন্ত এ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। সত্তরের দশকে দৈনিক বাংলায় পাবনা মানসিক হাসপাতালের ওপর তাঁর প্রায় দুইশ পর্বের এক বিশাল ধারাবাহিক প্রতিবেদন সারা দেশে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। ১৯৬৭ সালে পাবনার ভুট্টা আন্দোলন, আশির দশকে পাবনার ১৯ পর্বের মাদক পরিক্রমাসহ তাঁর বিভিন্ন সাহসী ও বস্তুনিষ্ঠ প্রতিবেদন এবং ফিচার তাঁকে সারা দেশে পরিচিত করে তোলে। বিশেষ করে যেকোনো বিষয়ভিত্তিক সংবাদ ও ফিচার তৈরির দক্ষতা এ প্রজন্মের সাংবাদিকদের জন্য অনুকরণীয়।
পেশাগত দক্ষতার স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৭২ সালে দৈনিক বাংলা কর্তৃপক্ষ মফস্বলে প্রথম মীর্জা শামসুল ইসলামকে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে পদোন্নতি দেয়। ১৯৭৬ সালে তিনি দৈনিক বাংলার সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার হন। এ ছাড়া সত্তরের দশকে বাংলাদেশ বেতারের পর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত প্রায় ২৫ বছর বাংলাদেশ টেলিভিশনে সাংবাদিকতা করেছেন। ১৯৬৮ সালে তিনি সাপ্তাহিক প্রবাহ নামে পাবনা থেকে একটি জাতীয় মানসম্মত পত্রিকা প্রকাশ করেন। তাঁর সম্পাদনায় পত্রিকাটি ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত প্রকাশিত হয়। ১৯৯১ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ সাংবাদিক সমিতি পাবনা জেলা শাখার সভাপতি ছিলেন।
এ ছাড়া কৃষিতে বিশেষ অবদানের জন্য ১৯৮৩ সালে মীর্জা শামসুল ইসলাম রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদক ও ১৯৮৫ সালে বার্ড পুরস্কারে ভূষিত হন।
মরহুম মীর্জা শামসুল ইসলাম ১৯৪৪ সালে পাবনার আমিনপুরে সম্ভ্রান্ত মীর্জা পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৯ সালের ৩ অক্টোবর ইন্তেকাল করেন।