সুনামগঞ্জে পাউবোর প্রকৌশলীসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সুনামগঞ্জের হাওরে হাজার কোটি টাকার ফসলহানির ঘটনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী, ঠিকাদারসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)।
আজ রোববার দুপুরে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমদ।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. বরকতুল্লাহ খান এনটিভি অনলাইনকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সম্প্রতি সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে বাঁধ নির্মাণের অনিয়ম-দুর্নীতির কারণে ফসলহানি হওয়ায় দুদকের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমদ মামলা করেন। মামলায় পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ ১৫ জন কর্মকর্তা, ঠিকাদার ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) লোকজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলাটি দুদকে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তাঁরা মামলাটি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।
সুনামগঞ্জে গত এপ্রিল মাসের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিতে ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙে ১৪২টি হাওরের বোরো ফসল তলিয়ে যায়। হাওরে ফসলহানির পর ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এরপর দুদক হাওরের ফসলহানি ও বাঁধ নির্মাণে অনিয়মের তদন্তে ১৩ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানের পরিচালক বেলাল হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে। এরপর ১৫ এপ্রিল পাউবোর সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আফছার উদ্দিনকে সুনামগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করা হয়।
ফসলহানির ঘটনায় ৩০ মে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ২ মে পাউবোর অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পুর্বাঞ্চল) মো. আবদুল হাই, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম ও সুনামগঞ্জ কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আফছার উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। মামলায় এই তিন প্রকৌশলীকেও আসামি করা হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের হিসাব অনুযায়ী, সুনামগঞ্জে এই বছরে ১৪২টি হাওরে দুই লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষ করা হয়েছিল। এর মধ্যে পাহাড়ি ঢলে বাঁধ ভেঙে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৬১২ হেক্টর জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন জেলার ৩ লাখ ২৫ হাজার ৯৯০ কৃষক পরিবার। তবে স্থানীয় কৃষক-জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, হাওরের ৯০ শতাংশ ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষকরা হাওরের ফসল হারিয়ে এখন নিঃস্ব, দিশেহারা।