নিরবে দেখছি সব, অসম্ভব অবিশ্বাসে
(সেপ্টেম্বর ১১, ২০০১ সনে নিউইয়র্কের টুইন টাওয়ারে বিমান হামলায় শহীদ সকলকে স্মরণ করে)
হাজার হাজার কণ্ঠ নিমিষে নিস্তব্ধ হয়ে গেলো
থেমে গেলো বাঘের গর্জনও;
তখন সকাল ৮:৪৬
তখন ৯:০৩
তখন ৯:৪৫
তখন সকাল ১০:১০
ওটা ছিল গা শিউরে ওঠা ভয়ঙ্কর পেন্টাগন
আকাশছোঁয়া টুইন টাওয়ারস
পেন্সিলভেনিয়ার সবুজ ঘাসের মাঠ;
সেদিন ছিল মঙ্গলবার
এগারই সেপ্টেম্বর।
আমি দেখেছি আমার নিগ্রো ভায়েরা পালাচ্ছে জীবনের ভয়ে
আমি দেখেছি শ্বেতাঙ্গ আপারা দৌড়াচ্ছে রক্তঝরা খালিপায়ে
আকাশ ভেঙে পড়ছে টিন-সুরকি লোহা-লক্কড়
পালাতে পালাতে অসম্ভব অবিশ্বাসে ঘুরে ঘুরে দেখছে সবাই
ধুলাবালি ছাইভষ্ম আর
ধ্বংসস্তুপের ভেতর থেকে স্যুটপরা এক্সিকিউটিভ মাকড়সার মতো
হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে আসছে, আর
যেন দান্তের নরক থেকে ভেসে আসা থোকা থোকা ছাইরঙ মেঘ
ঢেকে দিচ্ছে আমাদের নীলাকাশ।
ফায়ার ইঞ্জিনের গগন কাঁপা আর্তনাদে
সচকিত সকলেই,
কিংকর্তব্যবিমূঢ়
বিহ্বল বিস্মিত পথচারী,
তীর্থযাত্রীদের মতো ব্রুকলিন ব্রীজে
স্ট্রিটে, এভিন্যুতে
শোকের মিছিল পায়ে হেঁটে যায়
গানের পাখিরা নির্বাক উড়ছে আকাশে,
নিউইয়র্কের সমস্ত বেদনার ভার বুকে
হাডসন আর ইস্ট রিভারের উচ্ছল ঢেউগুলো থেমে গেছে।
হয়তো এখন, দূর গাঁয়ে
কিম্বা আরও দূর দেশে, গোল হয়ে বসে
ছোট ছোট ছেলেমেয়ে মন দিয়ে শোনে
ঈশপের গল্প ; আর
আমি, উইলোবি ইন্টারমিডিয়েট স্কুলে
জানালার গ্রিল ধরে নিরবে দেখছি সব অসম্ভব অবিশ্বাসে।