মংলায় ভবনধসে নিহত ৬, উদ্ধার অভিযান চলছে
বাগেরহাটের মংলা বন্দর সেনাকল্যাণ সংস্থার সিমেন্ট কারখানার নির্মাণাধীন চারতলা ভবনধসের ঘটনায় ছয়জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের ওই দুর্ঘটনায় ভবনের নিচে অনেক শ্রমিক আটক রয়েছে এমন আশংকায় উদ্ধারকাজ এখনো চলছে।
বাগেরহাটের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জাহিদুর রহমান বলেন, সেনাকল্যাণ সংস্থার মংলা সিমেন্ট কারখানার নির্মাণাধীন চারতলা ভবনে শ্রমিকরা কাজ করছিলেন। দুপুর পৌনে ১টার দিকে হঠাৎ ভবনের একাংশের ছাদ ধসে পড়লে তাঁরা চাপা পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও স্থানীয় লোকজন উদ্ধারকাজ শুরু করেন। প্রায় ৫০ জনকে উদ্ধার করে মংলা বন্দর হাসপাতাল ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
খুলনা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মিজানুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ছয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে বিকেলে পাঁচটি ও সন্ধ্যার পর আরো একটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতদের মধ্যে তিনজনের পরিচয় জানিয়েছে পুলিশ। তাঁরা হলেন বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার আমির আকন্দ ও মারুফ হাওলাদার, এবং খুলনা মহানগরীর আল-আমিন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘ভেতরে আরো মানুষ আটকা পড়ে আছে। আমরা ভবনটির ভেতরে গিয়েছিলাম। কিন্তু কেউ সাড়া দেয়নি।’
এদিকে ভবনধসের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে।
মংলা সিমেন্ট ফ্যাক্টরীর উপ-মহাপরিচালক ক্যাপ্টেন সৈয়দ হেলাল হোসেন এনটিভি অনলাইনকে জানান, নির্মাণাধীন কারখানা ভবনের ভিতরে ৩ নং বল হাউজের নির্মাণ কাজ চলছিল। ভবনটির ৩য় তলার ঢালাইকাজে প্রায় দেড় শতাধিক শ্রমিক কাজ করছিল বলে তিনি জানান।
প্রত্যক্ষদর্শী শ্রমিকরা জানিয়েছে ধসে যাওয়া নির্মাণ সামগ্রীর নিচে আরো ৩০/৩৫ জন আটকে আছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবী আটকে পড়া শ্রমিকের সংখ্যা ১৫/১৬ জন হতে পারে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ক্যাপ্টেন হেলাল জানান, আহতদের মধ্যে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৩ জন, রামপাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২২ জন এবং মংলা বন্দর হাসপাতালে সাতজন চিকিৎসাধীন আছেন। গুরুতর আহতদের কয়েকজনকে যশোর ও ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে আশংকাজনকভাবে আহতদের ঢাকায় নিতে সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার ঘটনাস্থলে রয়েছে বলেও জানান তিনি।
দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার অভিজানে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড।
এদিকে দুপুর ২টায় ঘটনাস্থলে আসেন আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য তালুকদার আবদুল খালেক। তিনি উদ্ধারকাজের ধীরগতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সেনাকল্যাণ সংস্থার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সেলিম, জেলা পুলিশ সুপার মোল্লা নিজাম উদ্দিনসহ প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারা।
এদিকে এ ঘটনায় শোক প্রকাশ করে আহতদের সুচিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।