প্রতিবেশীর অবৈধ সম্পর্কের ফসল সেই নবজাতক
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ধানখোলা গ্রামের পুকুরপাড় থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের লাশের পরিচয় মিলেছে। লাশ দাফনের পর গ্রামে তন্নতন্ন করে খুঁজে সেই মা ও বাবার সন্ধান পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, ধানখোলা গ্রামের উত্তরপাড়ার আবদুল আজিজ ওরফে খোকন পাঁচ বছর আগে স্ট্রোক করে মারা যান। সংসারে রেখে যান স্ত্রী ও দুই মেয়ে। এরই মধ্যেই বড় মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ের বয়স ১০ বছর। খোকনের মৃত্যুর পর তাঁর স্ত্রী বিভিন্ন সময়ে সবজি ক্ষেতে অথবা তামাক ঘরে শ্রমিকের কাজ করে দিনাতিপাত করে আসছিলেন। বর্তমানে তিনি গাংনীর রাইপুর ইউনিয়নের গোপালনগর গ্রামের তামাক ব্যবসায়ী মাসুদের আড়তে তামাক বাছাইয়ের কাজ করেন। স্বামীর অবর্তমানে মিথ্যা বিয়ের প্রলোভন দিয়ে প্রতিবেশী শফিউল ইসলাম তাঁর সঙ্গে অবৈধ মেলামেশা শুরু করেন। একপর্যায়ে সামাজিক চাপে তাঁদের বিয়ে হয়। দুই-তিন মাস পর তাঁদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে শফিউল ইসলাম ওই নারীকে তালাক দেন। তারপরও গোপনে অবৈধ মেলামেশা করতেন শফিউল।
প্রতিবেশীরা জানান, ওই নারী কখন যে কাজে যান, আর কোন রাতে বাড়ি ফিরেন তাঁদের চোখে পড়ে না।
নবজাতকের মা ওই নারী বলেন, ‘আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আমার দেহ ভোগ করে আসছিলেন শফিউল। তাঁর কারণে আমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ি। তাঁর কথামতো কলঙ্ক ঢাকতে সন্তান মারার পর পুকুড়ের পাশে ফেলে দিয়ে আসি।’
প্রতিবেশী শফিউল ইসলামেরও স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে রয়েছে।
শফিউলের স্ত্রী বলেন, ‘আমার স্বামী আগে ওই মহিলার কাছে যেতেন। বর্তমানে আর যান না।‘ তবে এ ঘটনার পর থেকে শফিউল ইসলাম আত্মগোপনে রয়েছেন।
গত রোববার দিবাগত রাতে ধানখোলা বাজারের পাহারাদার বছের আলী বাড়ি ফেরার সময় পুকুরের পাশে ওই নারীকে দেখে ফেলেন। সন্তান জন্মদানের সময় ধাত্রী কে কে ছিল এমন প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে ওই নারী বলেন, আমার সন্তান এমনিতেই প্রসব হয়েছে। কেউ ছিল না। এমনকি বড় মেয়েও ঘরে থেকে জানতে পারেনি।
সোমবার সকাল ৮টার দিকে ধানখোলা বাজার সংলগ্ন মুন্নাফ মিয়ার পুকুরপাড় থেকে একটি নবজাতকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি। নবজাতকের মাকে নিয়ে আসা হবে। সন্দেহভাজন শফিউল ইসলামকেও আটকের চেষ্টা চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’