ময়মনসিংহে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ
ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. রফিকুল হক পদত্যাগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার এই পদত্যাগপত্র শিক্ষাসচিবের কাছে জমা দিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
আজ বুধবার সকালে ড. রফিকুল হক এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘স্বাস্থ্যগত কারণে আমি রাষ্ট্রপতি বরাবর শিক্ষাসচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’ ২০১১ সালের ১০ আগস্ট থেকে উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করেন আসছিলেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) ড. আমিনুর রহমান চৌধুরীও তাঁর পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গত ১৮ মার্চ থেকে উপাচার্যের পদত্যাগ ও বিচার দাবিতে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম’ আন্দোলন করে আসছিল। কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে উপাচার্যবিরোধীরা বিক্ষোভ করছিল। উপাচার্যের সমর্থকরাও পাল্টা অবস্থান নিয়েছিল।
গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের কয়েকজন সদস্য জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির ২৮৭ কর্মচারী নিয়োগের স্থলে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে তিন শতাধিক কর্মচারী নিয়োগ দেওয়া হয়।
এ নিয়ে নিয়োগ কমিটির সদস্য প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। অনিয়মের প্রতিবাদ করায় গত ২৪ মার্চ সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টার পদ থেকে ড. আলমগীর হোসেনকে সরিয়ে দেওয়া হয়। গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরাম এর প্রতিবাদ করে। এর মধ্যে উপাচার্যবিরোধী শিক্ষকদের হাতে চলে আসে এক নারীর সঙ্গে উপাচার্যের কথোপকথনের অডিও ক্লিপ। ২৪ মার্চ থেকে আওয়ামী লীগপন্থী শিক্ষকদের ৫৯ জন বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ শুরু করেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩১ মার্চ গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের নেতারা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন।
এর আগে উপাচার্যবিরোধী চলমান আন্দোলন খতিয়ে দেখতে শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। ১ এপ্রিল কমিটির আহ্বায়ক ও ইউজিসির সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মহব্বত খান তিন সদস্যের কমিটি নিয়ে তদন্তে আসেন।
ড. রফিকুল হকের পদত্যাগের ব্যাপারে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের সভাপতি প্রফেসর ড. এ কে এম সামসুদ্দিন প্রাথমিকভাবে বলেন, ‘তাঁর পদত্যাগের কথা শুনেছি, টিভি স্ক্রলে দেখেছি। আমাদের দাবি ছিল, তাঁর অপসারণ ও বিচার। সেটি হয়ে থাকলে আমাদের দাবি পূরণ হয়েছে বলতে হবে। আমরা শুনেছি, তাঁকে অপসারণ করার ফাইল ওপরে চলে যাওয়ার খবর শুনে উনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।’