ফেসবুকে বেশিক্ষণ, বাড়ায় হতাশা
দিনের অনেকটা সময় আমাদের চলে যায় ফেসবুকে। অনেকেই টের পাচ্ছেন কাজের ক্ষতি হচ্ছে এতে। কিন্তু কাজের পাশাপাশি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতি হচ্ছে। এক গবেষণার বরাত দিয়ে টাইম অব ইন্ডিয়ায় বলা হয়, ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় কাটালে আপনি কিছু ক্ষতির শিকার হবেন।
ফেসবুকে বেশি সময় কাটালে আপনি অন্যদের জীবন নিয়ে বেশি ভাবতে শুরু করবেন। কারণ বন্ধুদের সব আপডেট তো আপনি পাচ্ছেন চোখের সামনে। কারো সাফল্য আপনাকে বেশ হতাশায় ফেলতে পারে আবার কারো হতাশা আপনারও হতাশার কারণ হতে পারে।
গবেষকরা বলছেন, হতাশ হওয়ার মতো বেশকিছু বিষয় রয়েছে ফেসবুকের মধ্যে। সামাজিক তুলনা তার মধ্যে অন্যতম। অন্যের সামাজিক অবস্থান এবং সাফল্যের সাথে নিজের তুলনা করে অনেকেই ভেতরে ভেতরে হতাশায় ভোগেন এবং ফেসবুকে যত বেশি সময় কাটাবেন, এই হতাশা আপনাকে আরো পেয়ে বসবে।
ইউনিভার্সিটি অব হিউস্টোনের সামাজিক মনোবিজ্ঞানের পিএইচডি গবেষক মাই-লি স্টার্স এ বিষয়ে দুটি গবেষণা করেছেন। গবেষণায় প্রাপ্ত ফলের ওপর ভিত্তি করে একটি প্রতিবেদন লিখেছেন তিনি। যেটি প্রকাশিত হয়েছে জার্নাল অব সোশ্যাল অ্যান্ড ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে।
নিজের গবেষণা সম্পর্কে স্টার্স বলেন, ‘অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে যাঁরা অতিরিক্ত সময় কাটান, তাঁরা ধীরে ধীরে অন্যদের জীবনের প্রতি বেশি আগ্রহী হয়ে পড়েন। বিশেষ করে যারা জীবনে সাফল্য পেয়েছেন। অন্যের সাফল্য দেখতে দেখতে একসময় তাঁরা হতাশ হয়ে পড়েন নিজেদের জীবন নিয়ে।’
স্টার্স আরো জানান, ‘ফেসবুক মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর গুরুতর প্রভাব বিস্তার করে। ব্যাপারটা এমন না যে, ফেসবুক মানুষকে হতাশ করে তোলে। এটা মানুষের নিজস্ব চিন্তাভাবনা থেকে তৈরি হয়।’
প্রথম গবেষণায় স্টার্স দেখেছেন, ফেসবুকে অতিরিক্ত সময় কাটালে মানুষের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়। আর এই হতাশাবোধ তৈরি হয় বেশি সময় কাটানোর মধ্যে দিয়ে।
স্টার্স বলেন, ‘ফেসবুকে আমরা অন্যদের সম্পর্কে অনেক নতুন তথ্য পাই, যেটা কারো সাথে যোগাযোগ না রাখলে পাওয়া সম্ভব হতো না। পরিচিত সবার খবর পেতে পেতে আপনার ভেতরে এক ধরনের তুলনা চলে আসবে। অন্যদের সামাজিক অবস্থানের সাথে নিজের সামাজিক অবস্থানের। বাকিদের ছবি এবং পোস্ট দেখে আমাদের মনে হয় সবাই সুখে আছে। তখন নিজেদের জীবনের অপ্রাপ্তিগুলো আরো প্রকট হয়ে ওঠে। কিন্তু আমরা চিন্তা করি না যে ফেসবুকে মানুষ সব সময় সুসংবাদই বেশি জানায়। সবার জীবনেই সমস্যা এবং সাফল্য আছে। সমস্যা বা ব্যর্থতার কথা কেউ সবাইকে ঘটা করে জানাতে চায় না। তাই দুঃখের খবর আমরা ফেসবুকে তেমন একটা দেখতে পাই না।’