ফেসবুকের মাধ্যমে ডিভোর্স নোটিশ
এলানোরা বাইদু থাকেন নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে। পেশায় তিনি একজন নার্স। কয়েকদিন ধরে তিনি আলোচনায় রয়েছেন বিশেষ এক কারণে। নিজের সাবেক স্বামীকে ফেসবুকের মাধ্যমে ডিভোর্স নোটিশ পাঠিয়েছেন তিনি। তাঁর এই কর্মকাণ্ডের বৈধতা দিয়েছেন ম্যানহাটন সুপ্রিম কোর্টের বিচারক ম্যাথু কুপার।
তাহলে কি ফেসবুকের রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস ম্যারিড থেকে ডিভোর্স করলেই আইনিভাবে বিচ্ছেদ হয়ে যাবে? এটার উত্তর এক কথায় দেওয়া বেশ মুশকিল।
২০০৯ সালে ভিক্টর সেনা ব্লাড-জারকুর সাথে বিয়ে হওয়ার কিছুদিন পরেই আলাদা হয়ে যান বাইদু। এরপর যখন বিচ্ছেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন বাইদু তখন স্বামীর সাথে ফোনে, ইমেইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভিক্টরের খোঁজ পাননি। শেষমেশ একজন ভাড়াটে গোয়েন্দা ঠিক করেছিলেন তাঁর স্বামীকে খুঁজে দেওয়ার জন্য। কিন্তু বিধিবাম। কোনোভাবেই স্বামীর কাছে মনের খবরটা পৌঁছে দিতে পারেননি তিনি।
শুধুমাত্র একটা মাধ্যমেই ভিক্টরকে নিয়মিত পাওয়া গেল, সেটা ফেসবুক। সেখানে তিনি নিয়মিত আপডেট থাকতেন। বাইদুর আইনজীবী স্পিনেল তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক ওয়েবসাইট ম্যাশেবলকে জানান, ‘ফেসবুকে যখন ভিক্টর নিয়মিতভাবে আছেন, আমরা ভাবলাম এটাই তাঁকে বিচ্ছেদের খবর জানানোর একমাত্র উপায়। আদালতকে সেটা জানানোর পর আদালত আরেকবার তাঁকে খোঁজার চেষ্টা করে দেখতে বললেন।’
কিন্তু ভিক্টরকে আর খুঁজেই পাওয়া গেল না। অবশেষে আদালত নির্দেশ দিলেন ফেসবুকের মাধ্যমেই ভিক্টরকে বিচ্ছেদের কথা জানিয়ে দিতে। সেটাই হবে আইনি বিচ্ছেদ। তবে ফেসবুকের মাধ্যমে বিচ্ছেদের ঘটনা এটাই প্রথম নয়, নাটকীয়তার কারণেই এটি নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে স্টেটেন দ্বীপের নোয়েল বিসকো ও তাঁর স্ত্রী আন্না মারিয়া অ্যান্টিগোর মধ্যে ফেসবুকের মাধ্যমে বিচ্ছেদকে বৈধতা দিয়েছিলেন ম্যাজিস্ট্রেট গ্রেগরি গ্লিডম্যান।
সানফ্রান্সিসকো-ভিত্তিক উইন্টার অ্যান্ড রস ল ফার্মের আইনজীবী মিন্ডে লরেন ম্যাশেবলকে জানান, ‘দুটি মামলাতেই বিশেষ পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালতকে রায় দিতে হয়েছে। দুই ক্ষেত্রেই বিবাদীপক্ষের সাথে যোগাযোগ করা কোনোভাবেই সম্ভব হচ্ছিল না।’
আরো একটি উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে, দুটি ঘটনাই ঘটেছে নিউইয়র্কে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রদেশের জন্য পরিস্থিতি অনুযায়ী বিচারকরা তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। ফেসবুকের মাধ্যমে বিচ্ছেদকে অন্যান্য প্রদেশের বিচারকরা বৈধতা দেবেন কি না, সেটা সম্পূর্ণই তাঁদের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে।