এক রাতের বৃষ্টিতেই সুনামগঞ্জ শহরে জলাবদ্ধতা, ভোগান্তি
এক রাতের বৃষ্টির পানিতে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের বেশ কিছু এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে শহরের অনেক এলাকার মানুষ।
এরই মধ্যে পৌর শহরের তেঘরিয়া, কাজির পয়েন্ট, আরপিননগর, সোমপাড়া, রায়পাড়া, নতুনপাড়া, মধ্যবাজার, বড়পাড়া, হাজিপাড়া, কালীবাড়ি, মোহাম্মদপুরসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানি ঢুকে পড়েছে অনেক বাসাবাড়িতে। বেশির ভাগ সড়কে পানি থাকায় যান চলাচলেও অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে।
শহরের বেশির ভাগ এলাকার বাসিন্দা অভিযোগ করে, পানি চলাচলের খাল দখল এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই শহরের প্রায় সড়ক পানির নিচে ডুবে থাকে। ময়লা-আবর্জনার পানি বাসাবাড়িতেও ঢুকে যায়। বৃষ্টির কমে যাওয়ার পরও অনেক এলাকায় পানি জমে থাকে। এই পানিতে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
শহরের ষোলঘর এলকার বাসিন্দা সাংস্কৃতিককর্মী রিপন চন্দ জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারে না। সব জায়গাতেই নোংরা পানি থাকে। আর যে কয়টা ড্রেনেজ ব্যবস্থা আছে সেগুলোর মুখও ময়লা-আবর্জনা আর পলিথিনে বন্ধ হয়ে আছে। ওই ড্রেনেজ দিয়েও পানি বের হয়ে যেতে পারছে না। ফলে অল্প বৃষ্টিতেই শহরে পানি জমে থাকে।
মোহাম্মদপুর এলাকার ক্রিকেটার জাকের আহমদ জানান, শুধু আজকের বৃষ্টি না, গত রাত থেকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। বৃষ্টি হলেই মোহাম্মদপুরের মাজারের রাস্তায় পানি উঠে যায়। বৃষ্টিপাত কমে গেলেও পানি নামতে অনেক দেরি হয়। এর মূল কারণ হলো আমাদের এলাকায় কোনো ড্রেন নেই। আর যত দিন ড্রেন না করা হবে আমাদের সমস্যার সমধান হবে না। ভোগান্তি থেকেই যাবে। তাই আমাদের এলাকায় দ্রুত ড্রেন করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত সামান্য বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় স্বীকার করে জানান, মাত্র পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টার বৃষ্টিতেই শহরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে পৌরবাসী ভোগান্তিতে পড়ে। তিনি বলেন, শহরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা উন্নত করতে আমরা এরই মধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে আমাদের প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। আমাদের প্রস্তাবনা প্রক্রিয়াধীন আছে। তবে যতই আমরা ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজ করি, এই সমস্যা সমাধান হবে না। কারণ শহরের মধ্যে দিয়ে যে পাঁচটি খাল ছিল তার প্রায় সবই অবৈধ দখলদারের দখলে আছে। আগে সব খাল দখলমুক্ত করতে হবে। তবেই শহরের জলাবদ্ধতার অবসান হবে। পৌরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আমরা কাজ করছি। আশা করি এই সমস্যার সমাধান হবে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু বকর সিদ্দিকী জানান, সকাল পর্যন্ত প্রায় ২১০ সেন্টিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরো কয়দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে।