হেঁটে হেঁটে ২৩৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি
হেঁটে এসেছেন ২৩৯ কিলোমিটার পথ, কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত। সময় লেগেছে নয় দিন। তার মধ্যে ঝড়-বৃষ্টি থাকায় মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিতে হয়েছে। এর আগে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিয়েছেন এই যুবক। একইভাবে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বান্দরবন জিরো পয়েন্ট থেকে আলিকদম ১০০ কিলোমিটার দুই দিনে হেঁটে যান।
বলছিলাম কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার দেবিদ্বার গ্রামের মো. সিরাজুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম শান্তর কথা। ঢাকার যাত্রাবাড়ীর দনিয়া কলেজ থেকে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয় নিয়ে সাইফুল ইসলাম স্নাতক (সম্মান) পাস করেন। এর আগে ২০১১ সালে দেবিদ্বার রিয়াজ উদ্দিন পাইলট হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ২০১৩ সালে দেবিদ্বার সুজাত আলী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন শান্ত।
সাইফুল ইসলাম নিজের শখের বসে ম্যারাথন দৌড় ও হেঁটে এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে পাড়ি দেন। তবে আর্থিকভাবে ততটা স্বচ্ছ নন বলে জানান তিনি। বাবা পেশায় ইলেকট্রিশিয়ান। তিন ভাইবোনের মধ্যে শান্ত দ্বিতীয়।
শান্ত জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি সব সময় হাঁটতেন ও দৌড়াতেন তিনি। ম্যারাথনে অংশ নিতে গিয়ে অনেক ভাই-বন্ধুর সঙ্গে পরিচয় হয়। এই পরিচিতির সুবাদে দৌড়ে কিংবা হেঁটে এই জেলা থেকে ওই জেলায় যাওয়ার সময় এই পরিচিত ভাই-বন্ধুরা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। তবে এর বাইরে নিজেই নিজের খরচ বহন করেন। এতে তাঁর আর্থিক খরচ বহন করা কষ্টসাধ্য হয়ে যায়।
সাইফুল ইসলাম শান্ত বলেন, ‘ছোট থেকেই সারা দেশ হেঁটে দেখার স্বপ্ন ছিল। তাই বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতাম। আর নিজেকে প্রস্তুত করতাম। বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিচ্ছি। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে আমি বান্দরবান জিরো পয়েন্ট থেকে আলিকদম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার দুই দিনে হেঁটে যাই। এরপর দেশের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত হেঁটে যাত্রা শুরু করতে চেয়েছি। কিন্তু করোনা মহামারি শুরু হলে তা আপাতত বন্ধ রাখি। পরে দেখলাম এই করোনা মহামারি হয়তো আর শেষ হবে না, তাই আবার শুরু করলাম। গত ১২ আগস্ট আমি দেবিদ্বার থেকে রওনা করি। ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে হবিগঞ্জ হয়ে জগন্নাথপুর পৌঁছাই। গতকাল ২১ আগস্ট সুনামগঞ্জ শহরে পৌঁছাই। তবে বৃষ্টি, ঝড় থাকায় আমার কিছুটা সমস্যা হয়েছে। আমার এই হাঁটার সময় আমি স্ট্রাভা অ্যাপ ব্যবহার করেছি যাতে আমার প্রত্যেক মুভমেন্ট এই অ্যাপে রেকর্ড করা আছে।’
শান্ত বলেন, ‘আমি সারা দেশ হেঁটে দেখতে চাই, এটা আমার অনেক বড় স্বপ্ন। কিন্তু আমি আর্থিকভাবে ততটা স্বচ্ছল না। তাই কেউ বা কোনো প্রতিষ্ঠান আমাকে স্পন্সর করলে আমার এই স্বপ্নটা পূরণ হতো। তারপরও আমি হাঁটা চালিয়ে যাব। আর্থিকভাবে কিছুটা কষ্ট হবে কিন্তু আমি আমার স্বপ্ন পূরণ করব।’