থেমে গেল উৎপল বসুর কবিতা
থেমে গেল কবি উৎপল কুমার বসুর কলম। স্তব্ধ হয়ে গেল সদা-উৎসরিত কবিতার পঙক্তি। শনিবার দুপুরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিং হোমে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
কয়েকদিন আগে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে নার্সিং হোমে ভর্তি হন তিনি। সেখানেই আজ শনিবার ভারতীয় সময় দুপুর ২টা ২০ মিনিটে শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন উৎপল বসু। কবির মৃত্যুতে কলকাতার সাহিত্যানুরাগীদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
১৯৩৯ সালে কলকাতার ভবানীপুরে জন্ম উৎপল বসুর। কলকাতার পাশেই বহরমপুর এবং দিনহাটায় স্কুলজীবন, এরপর কলকাতায় কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয়।
১৯৫৬ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘চৈত্রে রচিত কবিতা।’ এরপর আর কবিকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজস্ব কাব্যশৈলী তাঁকে স্থান করে দেয় পাঠক হৃদয়ে। তবে একপর্যায়ে সাহিত্যে অশ্লীলতার দায়ে পুলিশি মামলায় জড়িয়ে পড়েছিল কবির নাম। এর জেরে কলকাতার কলেজে অধ্যাপকের চাকরি থেকে পদত্যাগ করতে হয় তাঁকে।
ষাটের দশকের মাঝামাঝি যুক্তরাজ্যে চলে যান কবি উৎপল বসু। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে ফিরে আসেন সেখান থেকে। বরাবর তাঁর কবিতা দুই বাংলার পাঠক মহলে সমাদর পেয়ে এসেছে।
২০০৬ সালে কবি তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘সুখ-দুঃখের সাথীর’ জন্য পান আনন্দ পুরস্কার। এরপর ২০১৪ সালে পান সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার।
কবি উৎপল বসুর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ হলো ১৯৮২ সালে লেখা ‘লোচনদাস কারিগর’, ১৯৮৬ সালে লেখা ‘খণ্ড বৈচিত্র্যের দিন’, ১৯৯৫ সালে লেখা সলমা জরির কাজ’, ১৯৯৬ সালে লেখা ‘কহবতীর নাচ’। তাঁর উল্লেখযোগ্য অন্য কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বক্সিগঞ্জে পদ্মাপাড়ে’, ‘তুসু আমার চিন্তামনি’, ‘পিয়া মন ভাবে’ ইত্যাদি। এ ছাড়া ১৯৭০ সালে তাঁর গল্পগ্রন্থ ‘নরখাদক’, ১৯৯৪ সালে ‘ধূসর আতা গাছ’ প্রকাশিত হয়।
ক্যাপশন : কবি উৎপল কুমার বসু। ফাইল ছবি