সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে বিদায়ী ডিসির হৃদ্যতা সমাবেশ
সুনামগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের উদ্যোগে বিদায়ী জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সম্মানে সমাবেশ হয়েছে। জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ড কার্যালয় মিলনায়তনে আজ বুধবার দুপুরে এই অনুষ্ঠান হয়। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন।
জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. নুরুল মোমেন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদ উল্লাহ সরকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুরুতেই বিদায়ী জেলা প্রশাসককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি তাঁর হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়া হয় সুনামগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও তথ্যপ্রযুক্তি) মো. জসীম উদ্দিন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াসমিন নাহার, সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ পরিমল কান্তি দে, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আলী আমজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হায়দার চৌধুরী প্রমুখ।
এ সময় সুনামগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যরা আবেগঘন পরিবেশে জেলা ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদকে বিদায় জানান। সেইসঙ্গে তাঁরা বিদায়ী জেলা প্রশাসকের মুক্তিযুদ্ধকে তরুণ ও আগামী প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেওয়াসহ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে বিভিন্ন ব্যতিক্রমী কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করেন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বিদায়ী জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমি যখন ছোট ছিলাম, স্কুলে পড়ালেখা করতাম তখন মুক্তিযোদ্ধাদের স্কুলের আশেপাশে পাওয়া যেত না। বইয়ে শুধু বইয়ের ভাষায় মুক্তিযুদ্ধকে জেনেছি। তখন দেশ অন্য একটি চেতনায় পরিচালিত হতো। এখন আপনাদের কাছাকাছি থেকে অতি কাছ থেকে সংগ্রামী ভাষায় মুক্তিযুদ্ধের গল্প জানছি। আপনাদের শ্রেষ্ঠত্ব সবচেয়ে ওপরে। আমি এ জেলায় কর্মরত আপনাদের সন্তানতুল্য হিসেবে আপনাদের সহযোগিতায় সুনামগঞ্জের প্রান্তর থেকে প্রান্তরে ঘুরে চেষ্টা করেছি মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরতে। মুক্তিযোদ্ধাদের সঠিক তথ্য পরিচয় ও তাদের কবর শনাক্তের, যেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান এসে অন্তত তাদের কবরটা খুঁজে পায়। ডলুরা, বাঁশতলাসহ জেলার সব স্থানের গণকবরগুলো সুন্দর করে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি যথাযথ সম্মান দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস নতুন প্রজন্ম এর থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবে।’