সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার দায় এড়াতে পারে না সরকার : ডা. জাফরুল্লাহ
সুনামগঞ্জের শাল্লায় হিন্দুদের ঘরবাড়ি, মন্দিরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লজ্জা, এটা তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার লজ্জা। কারণ যেদিন হামলা হয়েছে, সেদিন বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ছিল। যিনি ছিলেন সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক একজন মানুষ।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের দেখতে গিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এসব কথা বলেন।
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমার প্রধানমন্ত্রী এটাকে কীভাবে নিচ্ছেন, জানি না। কিন্তু সেই দিন তাঁর দলের লোকজন মসজিদের মাইক ব্যবহার করে সংঘবদ্ধ হয়ে, হিন্দুদের ঘরবাড়িতে যে হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে—সেটা কোনও সভ্য সমাজে ঘটতে পারে না।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এই ঘটনার তদন্ত চাই, তবে অনন্তকালের তদন্ত চাই না। নিরপেক্ষ তদন্ত। তবে আগামী সাতদিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে এক মাসের মধ্যে বিচারকাজ সম্পন্ন করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের প্রতি সম্মান দেখিয়ে, সাতদিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে; এক মাসের মধ্যে জড়িতদের বিচার করুন। আর এই ব্যর্থতার জন্য এই অঞ্চলের লোকজনের কাছে এসে ক্ষমা চান। আর ১৭ মার্চের মতো বিশেষ এই দিনে কীভাবে এই ঘটনা ঘটল? এর দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী এড়াতে পারেন না। কারণ আমরা রামু দেখেছি, নাসিরনগর দেখেছি—এটা আমাদের লজ্জা।’
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, নোয়াগাঁও গ্রামে এসে ভাঙচুর হওয়া কিছু বাড়িঘর দেখেছি, মন্দিরও দেখেছি। যেকোনো ধর্মের উপাসনালয়ে হামলা, ভাঙচুর অত্যন্ত জঘন্য অপরাধ। দেশে আইন করতে হবে যেন মসজিদের মাইক আজান ছাড়া অন্য কোনও কাজে ব্যবহার করা না হয়। উসকানিমূলক কিছু কাজে মসজিদের মাইক ব্যবহার করা ইসলাম পরিপন্থি। আমরা স্থানীয় মানুষের বক্তব্য শুনে জেনেছি, এই হামলায় কেবল হেফাজত নয়, ক্ষমতাসীন দলের বিপুল নেতাকর্মীও অংশ নিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা ছিল প্রশাসনের। তারা এখনও হেসে-খেলে বেড়াচ্ছে। তাদের এখান থেকে সরিয়ে দিন।’
এ সময় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকী, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য নঈম জাহাঙ্গীর, সিলেট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমদাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু প্রমুখ।