মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের কৃতী শিক্ষার্থী জাবির
ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটি মালয়েশিয়ার (আইআইইউএম) ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থীর পুরস্কার পেয়েছেন বাংলাদেশি জাবির আবেদিন।
গত ৭ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১তম সমাবর্তনে ‘বেস্ট ওভার অল স্টুডেন্টস অব ইউনিভার্সিটি অ্যাওয়ার্ড’ নেন জাবির। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মালয়েশিয়ার পাহাং প্রদেশের রাজা সুলতান হাজি আহমদ শাহ এ পুরস্কার দেন।
এ ছাড়া ৯ নভেম্বর ‘বেস্ট স্টুডেন্ট ওভার অল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট’ পুরস্কার প্রদান করেন আইআইইউএমের রেক্টর (ভাইস চ্যান্সেলর) প্রফেসর ড. জালেহা কামারুদ্দিন।
জাবির আবেদিন ব্যাচেলর অব ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে (মেকাট্রোনিক্স) অধ্যয়ন করেন। তিনি বেস্ট স্টুডেন্ট ব্যাচেলর অব ইঞ্জিনিয়ারিংসহ (মেকাট্রোনিক্স) তিনটি পুরস্কার গ্রহণ করেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ব্যাচেলর শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করে ভ্যালেডিক্টোরিয়ান (বিদায়ী) বক্তব্য দেন বাংলাদেশের এ কৃতী শিক্ষার্থী।
জাবির বিশ্ববিদ্যালয়ে ভালো ফলাফলের জন্য একাডেমিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ও স্কলারশিপ পান। তিনি বিভিন্ন কোর্সের প্রজেক্ট হিসেবে তৈরি করেন ড্রোন ও রোবট। ড্রোনটির বিশেষ একটি বৈশিষ্ট্য ছিল, যেটি শূন্যে ভাগ হয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া জাবির ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট বা ইন্টার্নশিপ করেন বাহরাইনের একটি পেট্রোমেকানিক্যাল কোম্পানিতে।
পড়ালেখার পাশাপাশি জাবির ডিবেটে বিভিন্ন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ওআইসি ইন্টারভার্সিটি ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপ, মালয়েশিয়ান রয়্যালস ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপ, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপ (ফিলিপাইন), অস্ট্রাল-এশিয়ান ইন্টারভার্সিটি ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপ (নিউজিল্যান্ড), ইউনাইটেড এশিয়ান ডিবেটিং চ্যাম্পিয়নশিপসহ (ম্যাকাউ, চীন) আরো অনেক ডিবেটে অংশগ্রহণ করে পুরস্কৃত ও প্রশংসিত হন জাবির।
জাবির বলেন, ‘ভালো ফলাফলের জন্য অবশ্যই প্রথমে আমার বাবা-মা এবং আমার পরিবারকে ধন্যবাদ দিতে চাই। এ ছাড়া ডিপার্টমেন্টের টিচার, বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি এবং মুহাম্মদ আবদুল লতিফ ভাই (ডিবেট ট্রেইনার) আমাকে অভিভাবকের মতো বিভিন্ন সময় দিকনির্দেশনা দেন। যাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’
কৃতী এ শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভালো ফলাফলের জন্য টাইম ম্যানেজমেন্ট এবং কঠোর পরিশ্রম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি জিরো সেকেন্ড ওয়েশটেজ পলিসি মেনে চলি। প্রত্যেক সেকেন্ড কাজে লাগানোর চেষ্টা করি। প্রত্যেক ঘণ্টা ডায়েরিতে লিখে আবার তা পর্যালোচনা করি।’
ভবিষ্যতে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বা জাপানে ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর বিষয়ের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে চান এবং দেশ-জাতির জন্য অবদান রাখতে চান জাবির।
১৯৯৩ সালে বাহরাইনের সালমানিয়াতে জন্ম জাবির আবেদিনের। জাবির দি ইন্ডিয়ান স্কুল, বাহরাইন থেকে মাধ্যমিক (২০০৮) এবং উচ্চ মাধ্যমিক (২০১০) পাস করেন। তাঁর বাবা জয়নাল আবেদিন এবং মা সোহেলা ইয়াসমিন। বাবা জয়নাল আবেদিন বাহরাইনে ওয়ার্কস অ্যান্ড হাউজিং মন্ত্রণালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মরত। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তাঁর গ্রামের বাড়ি ফেনী জেলার দাগনভূঞার উত্তর জয়লাশকরাতে।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে জাবিরের বাবা-মা উপস্থিত ছিলেন।