শিশুর মেরুদণ্ডে ব্যথা
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ, শিশুরা জাতির মেরুদণ্ড। তাই আমাদের শিশুদের সুস্থ ও সবল হওয়া খুবই জরুরি। বর্তমানে অনেক রোগী পাচ্ছি যাদের বয়স ৮ থেকে ১৫ বৎসরের মধ্যে। এদের প্রধান সমস্যা মেরুদণ্ডে ব্যথা। এই ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে গিয়ে আমরা রোগীর ইতিহাস যাচাই করে সাধারণত দেখতে পাই-
১। তাদের প্রতিদিন সকালে ব্যাগ ভর্তি বই নিয়ে স্কুলে যেতে হয়, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় ব্যাগ ভর্তি বইয়ের ওজন শিশুটির শরীরের ওজনের চেয়েও বেশি! এই অধিক ওজনের ব্যাগ বহন করতে শিশুর পিঠের মাংসপেশিগুলো স্টিফ বা শক্ত হয়ে যায়।
২। তাদের দৈনন্দিন কাজের মধ্যে কোনো শারীরিক ব্যায়াম নেই। যেমন- সকালে ঘুম থেকে উঠে ব্যাগ ভর্তি বই নিয়ে স্কুলে যায়, তারপর বাসায় ফিরে একটু কম্পিউটার গেম, তারপর যথারীতি একের পর এক টিউটর আসে, তারপর স্কুলের হোমওয়ার্ক শেষ করতেই চলে আসে ঘুমানোর সময়, সব কিছু মিলিয়ে খেলাধুলা কিংবা শারীরিক ব্যায়াম করার জন্য সুযোগ নেই বললেই চলে।
৩। অনেকেই আরামের কথা চিন্তা করে ঘুমোনোর জন্য সন্তানের বিছানাটি ফোমের করে দেন, এটি শিশুর জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর, কারণ ফোমের বিছানায় শিশুর মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক আকৃতি পরিবর্তন করে দিতে পারে।
উল্লিখিত কারণগুলো শিশুদের মেরুদণ্ডের পেছনের মাংশপেশিগুলোকে খুবই দুর্বল করে ফেলে, যা শিশুদের মেরুদণ্ডে ব্যথার জন্য দায়ী।
পরামর্শ :
- স্কুল ব্যাগের ওজন যেন শিশুর বহনযোগ্য হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- শিশুর নিয়মিত কিছু শারীরিক ব্যায়ামের ব্যবস্থা নিতে হবে।
- শিশুর খেলাধুলার জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে।
- শিশুর শোবার বিছানা শক্ত হতে হবে, অন্যথায় মেরুদণ্ডের স্বাভাবিক গঠন বদলে যেতে পারে।
- সর্বোপরি শিশু ব্যথায় আক্রান্ত হলে দেরি না করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
লেখক : চেয়ারম্যান ও চিফ কনসালট্যান্ট, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল