জাবির পরিবেশ সংগঠনের কর্মী র্যাব হেফাজতে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ বনী আমিন ফকিরকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে। আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় ‘জঙ্গি সম্পৃক্ততার’ কথা বলা হলেও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে ধরনের কোনো কিছু পাওয়া যায়নি বলেও জানিয়েছে পুলিশের এই এলিট ফোর্স।
বনী আমিন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তিনি ‘সবুজ পরিবেশ আন্দোলন’ নামে একটি সংগঠনেরও সক্রিয় কর্মী। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ্ববর্তী গেরুয়া এলাকা থেকে বনী আদমকে আটক করা হয় বলে জানান তার বন্ধুরা। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় তিনি গেরুয়া এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে মেসে থাকতেন। তিনি ক্যাম্পাসে পরিচিত মুখ। সবার সঙ্গেই মিশতেন।
বন্ধুদের ভাষ্য অনুযায়ী, রাতে র্যাব সদস্যের পরিচয় দিয়ে কয়েকজন ব্যক্তি এসে বনী আমিনকে গাড়িতে করে তুলে নিয়ে যেতে চায়। এ সময় কারণ জানতে চাইলে, র্যাব সদস্যরা নিজেদের পরিচয়পত্র (আইডি কার্ড) দেখায়। তারা জানায়, বনী আমিনের বিরুদ্ধে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগ আছে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি যেসব পোস্ট দেন এবং কর্মকাণ্ড চালান তাতেই তাদের সন্দেহ হয়েছে।
এ সময় বনী আমিনের কক্ষ থেকে র্যাব একটি মোবাইল ও পুরাতন ডেস্কটপ কম্পিউটার নিয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে বনী আমিনের ফেসবুক আইডিতে গিয়ে দেখা যায়, ধর্মীয় পোস্ট ও সামাজিক সচেতনতামূলক ভিডিও আপলোড করতেন তিনি।
এ ব্যাপারে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ফারহা মতিন জুলিয়ানা আজ বুধবার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তথ্যটি জেনেছি। জানার পরই আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করেছি। আমরা এ নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকে এভাবে ধরে নিয়ে যাওয়া আমাদের জন্য উদ্বেগের উল্লেখ করে বিভাগীয় প্রধান জানান, ‘শিক্ষার্থীরা র্যাব পরিচয়ে আসা ব্যক্তিদের দুটি গাড়ির নম্বর লিখে রাখেন।’
অধ্যাপক ফারহা মতিন জুলিয়ানা আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রক্টর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আশুলিয়া থানা পুলিশকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে। পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন তৎপর রয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) আ স ম ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রথম থেকেই তৎপর ছিলাম। পুলিশ প্রশাসন, র্যাব ও গোয়েন্দাবাহিনীর সঙ্গে যোগযোগ করেছি। র্যাব-৪ বনী আমিনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এখন তাকে র্যাব-৪-এর কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটকের কারণ জানা যাবে।’
এ বিষয়ে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বনী আমিন আমাদের হেফাজতে আছেন। এখনও পর্যন্ত আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করে কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাঁর বাবা-মাকে ডাকানো হয়েছে। তাদের কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারপর বিস্তারিত জানানো যাবে।’