দিনাজপুরে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আলুবীজ বিক্রির অভিযোগ
দিনাজপুরে কৃষকদের আলু বীজ না দিয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেশি দামে বীজ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের তিন কর্মকর্তা এমন দুনীতি করে আসছেন বলে কৃষকদের অভিযোগ।
অভিযোগে জানা গেছে, সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বীজবিপণনে দায়িত্বরত তিন কর্মকর্তা এই অবৈধ কাজটি করে আসছেন।
এই তিন কর্মকর্তা হলেন জেলার কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের উপরিচালক আব্দুর রশিদ, অতিরিক্ত উপরিচালক (এডি) শাহানা বেগম এবং দিনাজপুর থেকে সদ্য বদলি হওয়া উপপরিচালক মাজাহার হোসেন। মাজাহার হোসেন সম্প্রতি দিনাজপুর থেকে বদলি হয়ে গেলেও এ কাজে তিনিও জড়িত বলে অভিযোগ করে কৃষকরা।
সদর উপজেলার গুলগলা এলাকার কৃষক মো. নজরুল ইসলাম, নয়নপুরের আঞ্জুমান নেছা, চুইহাড়ির শাহানাজ পারভীন, সিংহাড়ির আশরাফুল ইসলামসহ আরও কৃষকদের অভিযোগ থেকে জানা যায়, দিনাজপুরের ১৩ উপজেলার কৃষকরা আলুবীজ চাইলে কৃষি অফিসের মাধ্যমে তালিকা দেওয়া হয়। তালিকায় নাম থাকলেও তাদের বীজ দেওয়া হয় না।
ঘোড়াঘাট, নবাবগঞ্জসহ বেশ কয়েকটি স্থানের বিএডিসির ডিলাররা জানান, চার থেকে পাঁচ টন বীজ দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তারা বীজ দিচ্ছে না। নশিপুর আলু বীজ গুদামের আলু সিন্ডিকেটের কাছে দেওয়া হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলার এনামুল, কবিরাজ হাটের সোহাগ ও আনসার এবং হাবিবসহ আরও বেশ কয়েকজন ডিলারকে ১৫০ টন থেকে ২০০ টন পর্যন্ত আলুবীজ দেওয়া হয়েছে। এই সিন্ডিকেট বিভিন্ন ডিলারের লাইসেন্স দিয়ে কোনো রকম অথরাইজ ছাড়াই বীজ কিনছে।
নশিপুরে সকাল থেকে কৃষক এবং ডিলাররা আলুবীজ সংগ্রহ না করতে পারলে কথিত সিন্ডিকেটের সদস্যরা অবাধে ট্রাকে-পিকাপে আলু লোড করে নিয়ে যাচ্ছে। গভীর রাত পর্যন্ত চলে ট্রাকে-পিকাপে আলু নেওয়ার কাজ।
আরও অভিযোগ রয়েছে কৃষকদের জন্য ৪৮০ কেজি আলু বীজ বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হয় তিন বস্তা। তাও আবার নিম্নমানের। ২৭১ জনের তালিকা থাকলেও প্রকৃতপক্ষে দেওয়া হয়েছে ২৩৫ জন কৃষককে। বাকি কৃষকদের আলুবীজ দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে সাবেক উপপরিচালক মাজাহার হোসেন বলেন, ‘এখানে কোনো অনিয়ম হয় না। নিয়ম মতোই বীজ বিক্রি করা হয়ে থাকে।’
বর্তমান উপপরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে অনেক রাত পর্যন্ত বীজ সরবরাহ করি। যাতে বীজ অবিক্রিত না থাকে।’
অপরদিকে, এডি সাহানা বেগম বলেন, ‘দুর্নীতি করলে আপনারা পেপারে দেন। যা ইচ্ছা লেখেন।’