গণরুমই ঠিকানা জাবির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের
দীর্ঘ ২০ মাস পর হলে ওঠার অনুমতি পেলেও কোনো সিট পাননি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দ্বিতীয় বর্ষের (৪৯ ব্যাচের) শিক্ষার্থীরা। করোনার সংক্রমণ এড়াতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণরুম থাকবে না বলা হলেও, শেষ পর্যন্ত গণরুমেই ঠাঁই হলো শিক্ষার্থীদের।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ হলের সামনে জড়ো হতে থাকেন। সবার হাতেই ছিল ট্রাঙ্ক, ব্যাগ, বইপত্র ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যাশিত সিটের আশায় শিক্ষার্থীরা হলে এলেও সেই সিটের দেখা মেলেনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ন্যূনতম এক ডোজ করোনার টিকা গ্রহণকারীদের হলে উঠতে দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে হল অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার। কিন্তু, গণরুমে উপেক্ষিত স্বাস্থ্যবিধি। নেই কোনো আলাদা সিটের ব্যবস্থা। গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন। কোনো হলে মিনি গণরুমে শিক্ষার্থীদের রাখা হলেও অবস্থা গণরুমের মতোই।
দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মুহিবুল্লাহ মুহিব হলে ওঠার জন্য কিশোরগঞ্জ থেকে এসেছেন। কিন্তু গণরুমে ঠাঁই হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে তিনি জানান, ‘আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় জেনেই জাবিতে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের গণরুমেই মেঝেতে বিছানা করে থাকতে হবে। শীতের এই সময়ে মেঝেতে ঘুমানো খুবই কষ্টকর ব্যাপার।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মোহা. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আবাসিক হলগুলোতে সিটের সংকটের ব্যাপারে অবগত আছি। অন্তত ৫০ ভাগ শিক্ষার্থীকে আমরা আবাসনের আওতায় আনার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, ৪৪ ব্যাচের অনেকেই এখনও হলে অবস্থান করায় এ সংকট এড়ানো যায়নি। তবে, গণরুমগুলোতে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই নির্দিষ্ট দূরত্বে ছাত্রদের রাখা হয়েছে। কিছু গণরুমে খাট দেওয়া হয়েছে।’
ছাত্রদের ঠিক কতদিন গণরুমে অবস্থান করতে হতে পারে জানতে চাইলে প্রভোস্ট জানান, ‘আমাদের নতুন হলগুলোর কাজ এ বছরের মধ্যেই শেষ হবে। আশা করছি, আগামী এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই আমরা ছাত্রদের গণরুম থেকে আবাসনের ব্যবস্থা করতে পারব।’
করোনা সংক্রমণ কমে আসায় ১১ অক্টোবর থেকে আবাসিক হলগুলো খুলে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর ১০ দিন পর সশরীরে ক্লাস শুরু করলেও প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষে ৪৯ ব্যাচের জন্য ৩০ নভেম্বর হলে ওঠার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।