কাতারে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত
মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বিস্তারিত অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়।
আয়োজনের অংশ হিসেবে শনিবার কাতারে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের অংশগ্রহণে অনলাইনে বাংলা ভাষায় বক্তৃতা প্রতিযোগিতা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বক্তৃতা প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন।
বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় মোট তিনটি দলে তিনজন করে যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন মোট নয়জন প্রতিযোগী। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীরা হলেন উম্মে হানি, সামরিন জাহান সারা, সামিয়া আকতার, মো. দিদার উজ্জামান, মহসিন, মাহজেবিন বিনতে হাসান, মাইশা জামান, রাহনুমা আনজুম এবং মাহমুদুল আলম।
কুইজ প্রতিযোগিতায় মোট ১০ জন প্রতিযোগী সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। বিজয়ীরা হলেন দুররিয়া আলিশা, ফকরুল আলম, বিল্লাল হোসেন, মিফতাহুল ফালহা, ওবাইদুল্লা আল রাফি, জান্নাতুল মাওয়া, মাহমুদুর রহমান, কামাল উদ্দিন, কামাল হোসেন ও জাহাঙ্গীর কবির।
করোনাভাইরাস সংক্রান্ত স্থানীয় বিধিনিষেধ মেনে ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গণে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয় এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত, ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফিরাত এবং দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া করা হয়। এ সময় ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়।
আলোচনায় কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা হয়, যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।
রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় প্রবাসীদের অবদান রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এ অবদানের মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদ ও স্বাধীনতার সূর্য সন্তানদের আত্মত্যাগের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা সম্ভব হবে। তিনি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রবাসে বাংলাদেশের ইতিবাচক অর্জনগুলো তুলে ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচি প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ‘বঙ্গবন্ধু সংলাপ’ নামে একটি সাক্ষাৎকার সিরিজের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। যেখানে বীর মুক্তিযোদ্ধা, কাতারের বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রেণি, নারী উদ্যোক্তা ও নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণ থাকবে। এ ছাড়া, বঙ্গবন্ধু শীর্ষক একটি ভিডিওচিত্র নির্মাণেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এর আগে দোহাস্থ বাংলাদেশ এমএইচএম স্কুল ও কলেজে রাষ্ট্রদূত মো. জসীম উদ্দিন জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। এ সময় দূতাবাসের কাউন্সেলর ড. মো. মুস্তাফিজুর রহমান, কাউন্সেলর মো. নাজমুল হাসান, কাউন্সেলর মো. মাহবুবুর রহমান, প্রথম সচিব তন্ময় ইসলাম, স্কুলের পরিচালক মো. আনোয়ার খুরশীদ, অধ্যক্ষ মো. জসীম উদ্দিনসহ শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।