মক্কায় অনিয়মের অভিযোগ বাংলাদেশি হাজিদের
চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে এসেছেন সর্বমোট এক লাখ ২৭ হাজার ২২৯ জন। হজযাত্রী, কার্যক্রমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, হজ ডেলিগেট, ধর্মমন্ত্রী ও মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাসহ মোট এক লাখ ২৭ হাজার ৫৯৬ জন ভিসা পেয়েছিলেন।
সৌদি আরবে যেতে পারেননি অবশিষ্ট ৩৬৭ জন। এর মধ্যে ৯৮ জন হজ অফিসে প্রতারণার অভিযোগ দিয়েছেন।
এ ছাড়া হজ ফ্লাইট বাতিল, ফ্লাইটে বিলম্ব, হজযাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে হজে না পাঠানো, এক বাড়ির হজযাত্রীকে অন্য বাড়িতে ওঠানো, নিম্নমানের খাবার পরিবেশন, চুক্তি অনুযায়ী কাঙ্ক্ষিত সুবিধা না দেওয়াসহ নানা অনিয়ম ও প্রতারণার অভিযোগ করছেন হজযাত্রীরা।
ঢাকা থেকে হজ পালন করতে আসা আব্দুস সালাম বলেন, ‘এজেন্সি তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে কাছে বাড়ি দেওয়ার কথা বলে দিয়েছে অনেক দূরে। হেরামে এসে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে পারি না, আসতে খুবই কষ্ট হয়। নিম্নমানের খাবার তো আছেই, তার চেয়ে বড় সমস্যা আবার এক রুমে ছয়-সাত করে একসঙ্গে গাদা গাদি করে থাকা।’
হাজিদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে মক্কায় বাংলাদেশ হজ মেডিকেলে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স থাকার কথা থাকলেও সরেজমিনে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। চার-পাঁচজন ডাক্তার রোগী দেখছেন, বাকি ডাক্তাররা কোথায় সেই প্রশ্নের সঠিক কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। এমনকি রাস্তায় যেতে বাংলাদেশ হজ ক্লিনিকের বাইরের সাইনবোর্ডটি নষ্ট দীর্ঘদিন ধরে। মক্কায় অবস্থিত বাংলাদেশ হজ মেডিকেল খুব সহজে খুঁজে পান না হাজিরা। ফলে সেখানে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বাংলাদেশি হাজিরা। এ ছাড়া চিকিৎসকরা রোগীদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন না বলেও অভিযোগ উঠেছে।
চট্টগ্রামের সন্দ্বীপের হাজি রুকসানা (৭৫) জানান, তওয়াফ করার সময় পায়ে ব্যথা পেয়ে বাংলাদেশ হজ ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে এসেছেন তিনি। কিন্তু দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করেও চিকিৎসকের দেখা পাননি।
ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে আসা হাজি মকবুল বলেন, ‘আমি ডাক্তার চেম্বারে ঢুকে বসে আছি, ডাক্তার পাশেরজনের সঙ্গে আড্ডায় মশগুল, আমি একটু ডেকেছি তাই আমার সঙ্গে ঝাড়ি দিয়ে রেগে উঠলেন তিনি।’
এভাবে অনেক অভিযোগ উঠেছে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে, আবার সবাই যে খারাপ তা না। আগামীতে যেন সুষ্ঠুভাবে সরকার হজ এজেন্সির অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বাস্থ্যসেবার দিকটা লক্ষ রাখে এ প্রত্যাশা হাজিদের।