এবার নেদারল্যান্ডসেও নির্মিত হবে শহীদ মিনার
ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নেদারল্যান্ডসের প্রশাসনিক রাজধানী হেগে নির্মিত হতে যাচ্ছে শহীদ মিনার।
গত সোমবার বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক হেগ শহরের জাউডারপার্কে এই শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে যুক্তরাজ্য, কানাডা, কোরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও নির্মাণ করা হয়েছে শহীদ মিনার।
নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে মানবতা ও বহুভাষাবাদ প্রচারের উদ্দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস কয়েক বছর ধরেই কাজ করে যাচ্ছে। দূতাবাসের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে, হেগ মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষ স্থায়ী শহীদ মিনার নির্মাণের অনুমোদন দিয়েছে। আর এই শহীদ মিনার নেদারল্যান্ডস এবং ইউরোপে বসবাসরত বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার ফল।
দূতাবাসের চেষ্টায় ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে হেগ পৌরসভা কর্তৃপক্ষ শহরের ঐতিহ্যবাহী জাউদারপার্কে শহীদ মিনার তৈরির জন্য জমি বরাদ্দ দেয়। বর্তমানে শহীদ মিনারটির নকশা প্রণয়নের কাজ চলছে।
কর্মদিবস, বৃষ্টি ও প্রচণ্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে নেদারল্যান্ডস এবং ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। এ ছাড়া ইউরোপে অবস্থান করছেন এমন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, দূতাবাস কর্মকর্তা, মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় বাসিন্দাসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
নিজের বক্তব্যে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রসচিব ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি শহীদ মিনার নির্মাণের জন্য জমি দেওয়ায় হেগ মিউনিসিপ্যাল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। সেইসঙ্গে সব মাতৃভাষা সংরক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এ সময় বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ এবং বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা উল্লেখ করেন মো. শহীদুল হক।
নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মুহম্মদ বেলাল তাঁর বক্তব্যে শহীদ মিনার নির্মাণের পর তা রক্ষণাবেক্ষণে সহযোগিতা করতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনুরোধ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ এ একাত্মতার মাধ্যমে বাঙালি জাতি যেভাবে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল সেই চেতনা ধারণ করে তিনি সবাইকে একত্রিত থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে হেগের উপমেয়র রবিন বালদেবসিং বলেন, এই শহীদ মিনার তথা ভাষা স্মৃতিস্তম্ভটি বাংলা ভাষা আন্দোলনের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হলেও এতে বিশ্বের সকল ভাষার চিত্র তুলে ধরা হবে। হেগ মিউনিসিপাল কর্তৃপক্ষ এই ঐতিহাসিক ঘটনার অংশ হতে পেরে আনন্দিত।